শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা
দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার বিক্ষোভের ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৯ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২৪
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার ও এক দফা দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে দোয়েল চত্বর এলাকায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে আমাদের আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ করতে রাজাকার তকমা দেওয়া হয়েছে। আমাদের রাজাকার বলুক আর যাই বলুক আমরা আমাদের দাবি আদায় করবো।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এখন এ আন্দোলন আর ছাত্রদের আন্দোলন নেই। যেখানে রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে আমাদের আন্দোলন নিয়ে এমন মন্তব্য করেছে, সেখানে এই আন্দোলন শুধু ছাত্রদের নেই। সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে নামার জন্য আহ্বান জানাই।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল বিকেল ৩টায় দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ; এরপর প্রয়োজনে সারাদেশে অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হবে।
সোমবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর রাতেও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সন্ধ্যার পর বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাস চত্বর থেকে ফিরে গেছেন পুলিশ সদস্যরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের সামনে থেকে চাঁনখারপুল পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রভোস্ট কমিটির একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতেও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
- হলে ফেরার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান, প্রভোস্টকে ‘দালাল’ বললেন ছাত্ররা
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন
সোমবার বিকেল ৫টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ/ওয়ার্ডেন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন
- শহীদুল্লাহ হলের সামনে সংঘর্ষ চলছে, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ
- কোটা আন্দোলনকারীরা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে শক্ত হাতে দমন
- আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১৫৫
- আন্দোলনকারীদের রাজাকার স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে: কাদের
সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১. শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব হলে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন;
২. প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে সার্বক্ষণিকভাবে হলে অবস্থান করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন;
৩. হলসমূহে কোনো বহিরাগত অবস্থান করতে পারবেন না;
৪. যেকোনো ধরনের গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে; এবং
৫. সকলকে নাশকতামূলক কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা যাচ্ছে। কেউ নাশতকতামূলক কাজে জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
টিটি/এএএম/বিএ/এমএস