লুব্রিকেন্টে অতিরিক্ত শুল্কায়নে ডলার পাচার বাড়বে: লিয়াব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৫ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২৪
জাতীয় প্রেসক্লাবে লিয়াব-এর সংবাদ সম্মেলন/ছবি জাগো নিউজ

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ফিনিশড লুব্রিকেন্টস অয়েলের অতিরিক্ত শুল্কায়ন নির্ধারণ করায় সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে লুব্রিকেন্টস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (লিয়াব)। সংগঠনটি জানিয়েছে, ফলে সরকারি সুবিধায় ওভার ইনভয়েসের সুযোগ থাকায় নিশ্চিতভাবে ডলার পাচার বাড়বে। সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ চেষ্টাও নিশ্চিতভাবে ব্যর্থ হবে।

সংগঠনটি জানিয়েছে, অতিরিক্ত শুল্কায়নে বাজারে উচ্চ মানসম্পন্ন ফিনিশড লুব্রিকেন্টসের সংকট দেখা দেবে, ভেজাল ও নিম্নমানের লোকাল লুব্রিকেন্টস বাজারে ব্যাপক বিস্তার লাভ করবে।

সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ জমসের আলী প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ন্যায্যতার জন্য ফিনিশড লুব্রিকেন্টস অয়েলের ওপর ২০২৪-২৫ বাজেটে বাজার মূল্যের অতিরিক্ত শুল্কায়ন মূল্য পরিবর্তন করে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার দাবি জানান। এসময় সংগঠনটির পরিচালক আবু কাশেম জামাল, দেলোয়ার হোসেন, সানোয়ার আহমেদ, এমদাদুল হক ও জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, নতুন অর্থবছরে আমদানিকারকরা সব প্রকার লুব্রিকেন্টস অয়েলের আমদানি শুল্কায়ন মূল্য (ওভার ইনভয়েস) অস্বাভাবিক হারে নির্ধারণ করায় বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার পাচারের পথ উন্মুক্ত হবে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এইচএস কোড সংযোজন করায় এ খাতের ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হবে।

২০২০ থেকে ২০২৪ অর্থবছরে বাজেটে সকল প্রকার ফিনিশড লুব্রিকেন্টস একই এইচএস কোড হতো জানিয়ে তিনি বলেন, এর শুল্কায়ন মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ২০০০ ডলার নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আগের এইচএস কোডের সঙ্গে আরও দুটি এইচএস কোড সংযুক্ত করা হয়েছে। এই সংযোজিত এইচএস কোড আন্তর্জাতিক বাজারের প্রচলিত ফিনিশড লুব্রিকেন্টস এইচএস কোডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই বাজেটে এইচএস কোড ২৭.১০.১৯.৩১ মিনারেল প্রতি মেট্রিক টন ২৫০০ ডলার এইচএস কোড ৩৪.০৩.৯৯.২০ সেমি সিনথেটিক প্রতি মেট্রিক টন ৩২০০ ডলার এবং এইচএস কোড ৩৪,০৩,৯৯.৩০ সিনথেটিক প্রতি মেট্রিক টন ৫০০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওই মিনারেল, সেমি সিনথেটিক লুব্রিকেন্টসের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রকৃত মূল্য ১৬০০, ১৭০০, ২০০ ডলার। সেই হিসেবে মিনারেল লুব্রিকেন্টস শুল্কায়ন মূল্য ৫৭ শতাংশ সেমি সিনথেটিক ৮৯ শতাংশ সিনথেটিক ১৫০ শতাংশ আমদানি শুল্কায়ন মূল্য (ট্যারিফ) বাড়ানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

তিনি আরও বলেন, বাজার মূল্য থেকে শুল্কায়ন মূল্য অতিরিক্ত ধার্য করায় প্রতি মেট্রিক টনে মিনারেল ১২০০ ডলার, সেমি সিনথেটিক ১৫০০ ডলার, সিনথেটিক ৩০০০ ডলার পাচার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে সরকারি সুবিধায় ওভার ইনভয়েসের সুযোগ থাকায় নিশ্চিতভাবে ডলার পাচার বাড়বে।

এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ধরনা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি জানিয়ে জমসের আলী বলেন, ফিনিশড লুব্রিকেন্টসের ওপর অতিরিক্ত শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণের ফলে পরিবহন, শিল্প, কল-কারখানা, বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্ট, কৃষি উৎপাদন, গার্মেন্ট শিল্পে খরচ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। সরকারের বর্তমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা নিশ্চিতভাবে ব্যর্থ হবে।

এনবিআর এই অস্বাভাবিক শুল্কায়ন মূল্যবৃদ্ধির ফলে এই সেক্টরে শত শত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এর সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার কর্মচারী চাকরিচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

এসএম/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।