ডিবি সেজে লেজার লাইট দিয়ে মহাসড়কে ডাকাতি করতেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪২ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৪
গ্রেফতার ডাকাত সদস্যরা

দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পোশাক পড়ে লেজার লাইট দিয়ে সংকেত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি থামাতেন সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্যরা। এরপর গাড়িচালক ও হেলপারের হাত-পা বেঁধে রেখে গাড়িসহ মালামাল ডাকাতি করতেন তারা।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি ডিমের গাড়ি ডাকাতির ঘটনায় চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ। তাদের গ্রেফতারের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

গ্রেফতাররা হলেন- আসলামুল হক আসলাম ওরফে বেলাল (৩৭), রমজান শেখ ওরফে কালু (৪০), মেহেদী শেখ হিরা (৩৩), জমির খান (৩৬) ও মো. জহিরুল ইসলাম চকিদার (৫০)।

একইভাবে সাভারের চান্দিনায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ডাকাতির ঘটনায় অপর এক অভিযানে ডাকাত দলের ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মো. মিরন ওরফে সুজন (৫০), মো. মেহেদী হাসান রাজীব (৩০), আব্দুল মতিন (৪২), বাদল মুন্সী (৪৫) ও সাগর ইসলাম (২৪)।

তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি গাড়ি, পুলিশের ওয়্যারলেস ও জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (১৪ জুলাই) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, মহাসড়কে ডিবি পুলিশের পোশাক পরে লেজার লাইট দিয়ে সংকেত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে ডাকাতি করে আসছিলেন তারা। চক্রটি ধারাবাহিকভাবে মূল্যবান যেকোনো পণ্যবাহী গাড়ি দেখলেই সংকেত দিতো। সম্প্রতি রূপগঞ্জে ডিমবাহী গাড়ি থামিয়ে চালকের হাত-পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রটি ডাকাতি করা পণ্য বিক্রি করতো। পাশাপাশি ডাকাতি করে নেওয়া গাড়ি দিয়ে তারা আবার ডাকাতি করতো।

হারুন অর রশীদ বলেন, সাভারের চান্দিনায় এক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ডাকাতির শিকার হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা শনাক্ত করা হয়েছে। সেসব ঘটনায় এই দুই ডাকাত দলের সদস্যরা জড়িত।

ভুক্তভোগীদের দায়ের করা মামলা থেকে জানা যায়, এই ডাকাত দলের সদস্যরা প্রতিদিনই মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি ডাকাতি করতেন। তারা প্রথমে পুলিশ সেজে গাড়ি থামার সংকেত দিতেন। এরপর পুলিশ পরিচয়ে গাড়ির কাগজ ও মালামাল সম্পর্কে জানতে চাইতেন। এ সময়ের মধ্যে ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা চালক ও তার সহকারীর হাত-পা বেঁধে নিজেদের অন্য গাড়িতে তুলি নিতেন। পরে তারা পণ্যবাহী গাড়ি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে পণ্য বিক্রি করে সটকে পড়তেন।

ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা বলতে চাই, দেশের কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটলে অবশ্যই মামলা করবেন। কারণ মামলা হলে এসব চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করতে পারবে। গ্রেফতার ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে পাঁচ থেকে ১২টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তারা পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য।

অভিযান সংশ্লিষ্ট ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতার ডাকাত দলের সদস্যরা নিজেদের আড়াল করতে অত্যন্ত কৌশলী। তারা নানান প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতেন।

টিটি/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।