দেশে ১ কোটি মানুষ মাদকাসক্ত, এটা ভয়ংকর সংখ্যা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:২৭ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৪
মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘দেশে বর্তমানে প্রায় এক কোটি মানুষ নাকি মাদকাসক্ত। এটা একটি ভয়ংকর সংখ্যা।’

তিনি বলেন, ‘দেশের ভবিষ্যত ছেলে-মেয়েরা যেন পথ না হারায়। তারা যেন এই সর্বনাশা নেশায় সম্পৃক্ত না হয়। সেজন্য মাদকের আগ্রাসন রুখতে আমরা কাজ করছি। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোসহ মাদকবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।’

রোববার (১৪ জুলাই) শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৪ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাদক এখন সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনায় নিয় মাদকের চাহিদা কমাতে ও ক্ষতি কমাতে বিশ্বের সঙ্গে কাজ করছি। বাংলাদেশ কোনো মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু ভৌগোলিক কারণে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের বা গোল্ডেন ক্রিসেন্টের বলে মাদকের বলয়ের ভেতরে প্রভাবটি খুব বেশি ফেস করে আসছি।’

তিনি বলেন, ‘এখন থেকেই যদি আমরা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ না করি তবে আমাদের আগামীর স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন, তেমন তিনি মাদকের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সে নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’

‘মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালানা, চাহিদা কমাতে ও মাদকবিরোধী বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। মাদক নির্মূল করতে মাদক আইনও সংশোধন করা হয়েছে। এ আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করা হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজ জেলখানার দিকে তাকালে দেখা যাবে একটি বড় অংশ মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা রয়েছে।’

দেশে ১ কোটি মানুষ মাদকাসক্ত, এটা ভয়ংকর সংখ্যা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মাদকের কুফল প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি কলেজপড়ুয়া মেয়ে ঐশীর কথা। ঐশী মাদকের আগ্রাসনে পড়ে তার বাবা-মাকে হত্যা করেছিল। কতখানি মাদকাসক্ত হলে সে এই কাণ্ড করতে পারে, সেটি অনুমান করা যায়। আরও একটি ঘটনা, কেরানীগঞ্জ থেকে এক দম্পতি এসে আমাকে বললেন- তার ছেলে বাসার ফ্রিজ-টিভি বিক্রি করে দিয়েছে মাদকাসক্ত হয়ে। তখন তাদের লিখিত দিতে বলি। তারা লিখিত দেন, এরপর ওই ছেলেকে মাদকাসক্ত কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এক মাস পর ওই ছেলের মা এসে বলেন আমার ছেলে না খেতে পেরে শুকিয়ে যাচ্ছে। তাকে ছেড়ে দেওয়া যায় না!’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশকে একটি আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রয়োজন সুস্থ, শিক্ষিত, মেধাবী ও কর্মক্ষম জনশক্তি। কিন্তু মাদকের হিংস্র থাবায় এই জনশক্তির উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আজ মাদকাসক্ত। মাদকাসক্তদের সুচিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনধারায় ফিরিয়ে আনতে চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করে থাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।’

টিটি/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।