ঢাকার ২৩ সড়ক ডুবে বিকল যানবাহন, তীব্র ভোগান্তিতে নগরবাসী
আষাঢ়ের বিদায়ক্ষণে ঢাকার বুকে যেন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামলো। টানা প্রায় চার ঘণ্টার ঝুম বৃষ্টিতে কাকভেজা হলো রাজধানী ঢাকা। বৃষ্টির পানিতে ডুবলো নগরীর বেশ কয়েকটি সড়ক। এসব সড়কে চলাচলরত যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে গাড়িগুলো বিকল হয়ে পড়লো। মাঝ সড়কে গাড়ি বিকল হওয়ায় সৃষ্টি হলো যানজট। সব মিলিয়ে বৃষ্টি, যানজট আর জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়লেন নগরীর বাসিন্দারা।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর প্রায় ২০টিরও বেশি সড়কে সরেজমিন ঘুরে এসব চিত্রই দেখা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, সকাল থেকে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়ক ডুবে গেছে। ইঞ্জিনে পানি ঢুকে অনেক গাড়ি মাঝরাস্তায় বিকল হয়ে পড়ে আছে। এজন্য রাজধানীবাসীকে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হাতে বাড়তি সময় নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
- একটুখানি বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় ঢাকা
- ঢাকার রাস্তায় আমাদের পানিতে ডুবে মরতে হবে?
- এবার বর্ষায় ঢাকা দক্ষিণে জলাবদ্ধতা হবে না: তাপস
গাড়ি বিকল হলো যেসব এলাকায়
সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, বায়তুল মোকাররম, শান্তিনগর, মালিবাগ মোড়, আরামবাগ, প্রগতি সরণি, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি রাপা প্লাজা, বংশাল, মিরপুর রোকেয়া সরণি, দয়াগঞ্জ মোড়, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, নিমতলী, টয়েনবি সার্কেল রোড, ধানমন্ডি ২৭, এলিফ্যান্ট রোড, মৎস্যভবন, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, ঢাকা গেট ভিআইপি রোড, মিরপুর মাজার রোড ও সেগুনবাগিচা এলাকার সড়কে পানি জমে যায়। এতে যানবাহন চলাচল হয় বিঘ্নিত।
ধানমন্ডি এলাকায় বেশ কয়েকটি প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য গাড়িও বিকল হয়ে সড়কের মাঝে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। জয়নুল আবেদীন নামের একজন গাড়িচালক জাগো নিউজকে বলেন, সকাল ১০টার দিকে শ্যামলী থেকে ধানমন্ডি এলাকায় আসি। ধানমন্ডি আসতেই ইঞ্জিনে পানি ঢুকে গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টার পরও গাড়ি সচল করতে পারছি না।
সেগুনবাগিচায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার বেশিরভাগ সড়কে হাঁটুপানি। ওই এলাকায় চলাচলরত যানবাহনগুলো বিকল হয়ে সড়কের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি জাগো নিউজকে জানান, ঢাকায় প্রচণ্ড বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার সড়ক ডুবে গেছে। অনেক গাড়ি বিকল হয়ে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য রাজধানীবাসীকে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হাতে সময় নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও বেসরকারি চাকরিজীবী কিংবা খেটে খাওয়া মানুষ সকাল থেকে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই জীবিকার টানে ঘরের বাইরে বের হয়েছেন। তবে ভারী বৃষ্টিতে তাদের অনেককেই বিপাকে পড়তে দেখা যায়। বৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ সড়কে যানবাহনের সংখ্যা ছিল একেবারেই কম।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এখন সারাদেশে যে কোনো মুহূর্তে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার ভারী বর্ষণের সতর্কবাণী দিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। দেশের পাঁচ বিভাগে ভারী বর্ষণের সঙ্গে দুই বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
টিটি/এমকেআর/জিকেএস