শিক্ষকদের আন্দোলন

পেনশন নিয়ে বাস্তবসম্মত সমাধানে যাবে সরকার: কাদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৭ পিএম, ০৮ জুলাই ২০২৪

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের করা আন্দোলনের বাস্তবসম্মত সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (৮ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও আছে। আনুষ্ঠানিক বসাবসি এখনো হয়নি। সিদ্ধান্ত তো নিতে হবে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে। এখানে আমরা সুপিরিয়র, না শিক্ষক সুপিরিয়র— এ বিতর্কে যাবো না। আমরা যার যার পদমর্যাদার ভিত্তিতে যেটা বাস্তবসম্মত সেটায় যাবো।’

শিক্ষার্থীদের চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন পরিহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আদালত কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে ফের আপিল করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনদুর্ভোগ পরিহার করা দরকার। আমরা মনে করি, দেশের উচ্চ আদালত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে রায় দেন। শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে সংগ্রাম শুরু করেছেন, তার মূল চালিকাশক্তি হলো মেধাবী জনগোষ্ঠী। শিক্ষিত, দক্ষ, স্মার্ট প্রজন্ম গঠনের মধ্যদিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে নিতে মেধাবী তরুণ প্রজন্ম আমাদের প্রধান প্রয়োজন।

সরকার কোটা বাতিলের দাবির প্রতি আন্তরিক বলেই অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল করেছেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আদালত উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে নিশ্চয়ই একটা চূড়ান্ত রায় দেবেন। উচ্চ আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত সবার অপেক্ষা করা উচিত। কোনো ধরনের উত্তেজনা, রাস্তাঘাট বন্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি পরিহার করা উচিত। বিশেষত এইচএসসি পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের অসুবিধা হয় যে কর্মসূচিতে, সে ধরনের কর্মসূচি পরিহার করা দরকার।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এর আগে যে কোটা আন্দোলন বাংলাদেশে হয়েছিল, সেখানকার প্রথম সারির ৩১ জন নেতা কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এটার হিসাব সাংবাদিকেরা নিতে পারেন।

কোটাবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক উপাদান যুক্ত হয়ে গেছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের বিভক্ত ও মেরুকরণের রাজনীতি এখানে যুক্ত হয়ে গেছে। কারণ, বিএনপি প্রকাশ্যে এবং তাদের সমমনারা এ কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে। তারা সমর্থন করেছে প্রকাশ্যেই। সমর্থন করা মানেই তারা এর মধ্যে অংশগ্রহণও করেছে। কাজেই এটা এখন মেরুকরণের রাজনীতির ধারার মধ্যেই পড়ে গেছে। এটার রাজনৈতিক রং নতুন করে বলার আর অপেক্ষা রাখে না।’

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এখানে কারা কারা যুক্ত আছে, কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, সেটা আন্দোলনের গতিধারা মধ্যেই বোঝা যাবে। এ গতিধারায় সময়ের পরিবর্তনে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

সারা বিশ্বে হওয়া আন্দোলনে রাজনৈতিক দল, ইউনিয়নের কর্মীরা অংশ নেন। এটাকে আওয়ামী লীগ নেতিবাচক হিসেবে দেখছে কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক দল বিশ্বের কোন দেশে আন্দোলনে শামিল হয়েছে? এটা বিচারাধীন। কোনো রাজনৈতিক দল পারে না এভাবে। এটা তো আদালতের রায়। তারা যে আন্দোলন করছে, এ সিদ্ধান্তই (কোটা বাতিল) ছিল সরকারের। সরকারই আবার আপিল করেছে। আদালত রায় দিয়েছেন। এখানে সরকারের দোষ কোথায়? এখান যে বিষয়টা আদালতের এখতিয়ার, সে বিষয়টা নিয়ে কথা বলা বা সমালোচনা করা, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা, এটা তো আইনসিদ্ধ নয়। তারা সেটাই বলছেন।

কোটাবিরোধী আন্দোলনে জনদুর্ভোগ কমাতে সরকারের কঠোর হওয়ার পরিকল্পনা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারপক্ষ তো আপিল করছে। এখনো আদালত চূড়ান্ত রায় দেননি। এর মধ্যে তারা কীভাবে হস্তক্ষেপ করেন? তারা বলছেন, জনদুর্ভোগ হয়— এমন কর্মসূচি পরিহার করা উচিত। আদালতের রায়, হোক তারপর দেখা যাবে।

আন্দোলন স্থগিত বা প্রত্যাহারের অনুরোধ করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমি যা বক্তব্য দিয়েছি, এ থেকে বুঝে নিন। আমার যা বলার বলে দিয়েছি। ভাষাটা বুঝে নিন। তাহলে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

এসইউজে/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।