ঝুঁকিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

ইঁদুরে বেহাল সড়ক বিভাজক, বিটুমিন ব্যবহারেও অবহেলা

মফিজুল সাদিক
মফিজুল সাদিক মফিজুল সাদিক , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৩ এএম, ০৭ জুলাই ২০২৪
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের প্রতিনিধি দল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হেয়ার ক্রাক ও সড়ক বিভাজকের অবস্থা পরিদর্শন করে। প্রকল্পের পলিমার মডিফাইড বিটুমিন খোলা অবস্থায় পায় তারা/সংগৃহীত

 ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। সড়কের অনেক স্থানে গর্ত দেখা গেছে। সড়ক বিভাজকে থাকা আগাছা নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে না। ইঁদুরের উৎপাতে ঝুঁকিতে পড়েছে সড়ক বিভাজক।

এছাড়া পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি দীর্ঘ সময় ধরে সড়ক বিভাজক থেকে পেভমেন্টে নিষ্কাশিত হতে থাকে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তার পেভমেন্ট। বিটুমিন ব্যবহারে দেখা গেছে অযত্ন-অবহেলা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ণ উপযোগিতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিতকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে ‘চার লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের দাউদকান্দি-চট্টগ্রাম অংশের চার বছরের জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ওই প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

নিবিড় পরিবীক্ষণ কার্যপদ্ধতি, প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে কাজের বাস্তব অগ্রগতি ও গুণগতমান পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে উপকারভোগীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাক্ষাৎকার এবং স্থানীয় পর্যায়ের কর্মশালার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা কিছু চলমান প্রকল্প নিবিড় পরিবীক্ষণ করেছি। এতে কিছু প্রকল্পে অগ্রগতি খারাপ দেখা গেছে। নানান কারণে কিছু প্রকল্পের অগ্রগতি নেই। কিছু প্রকল্পের আবার নির্মাণকালীন ত্রুটি বা বিচ্যুতি দেখা গেছে। তার মধ্যে অন্যতম ‘চার লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের দাউদকান্দি-চট্টগ্রাম অংশের চার বছরের জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ’ প্রকল্প। প্রকল্পের সংস্কারে কিছু কাজের অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে। সে বিষয়টি আমাদের নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে আছে। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়কে আমাদের সুপারিশ দেওয়া হবে, যাতে প্রকল্পের যেখানে গ্যাপ আছে সেটা আর না থাকে এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হলে চার লেনের স্থায়িত্ব আরও বাড়বে।’

‘প্রকল্পের সংস্কারে কিছু কাজে অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে। সেই বিষয়টি আমাদের নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে আছে। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়কে আমাদের সুপারিশ দেওয়া হবে, যাতে প্রকল্পের যেখানে গ্যাপ আছে সেটা আর না থাকে এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়।’-আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, সচিব, আইএমইডি

আইএমইডির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য কাজ হলো, সড়কবাঁধ মাটির কাজ, ট্যাক কোট, ওয়ারিং কোর্স, রোড মার্কিং, রাট কারেকশন বাই মিলিং মেশিন, ট্রাফিক সাইন, ফুটওভার ব্রিজ ইত্যাদি। প্রকল্পের বেস ক্যাম্পে মালামালের পাশে কোনো সাইন বোর্ড দেখা যায়নি। প্রকল্প এলাকায় নির্মাণাধীন স্থানে রাতে আলোর স্বল্পতা দেখা গেছে। প্রকল্পের কাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো বিটুমিন, যা খোলা আকাশের নিচে রয়েছে এবং বিটুমিনের অনেক ড্রামের মুখ কাটা অর্থাৎ আলগা অবস্থায় আছে- যা প্রত্যাশিত নয়। এছাড়া ল্যাবে ব্যবহৃত মেশিন ক্যালিব্রেশন করা হয়নি, সাইটে কোনো রেজিস্টার ইত্যাদি নেই।

তবে প্রকল্পে ব্যবহৃত মালামালের গুণগত মান পরীক্ষা করে ব্যবহার করা হচ্ছে। পেভমেন্টে ব্যবহৃত পলিমার মডিফাইড বিটুমিন যথাযথ প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করে ব্যবহার করা হচ্ছে। আগে ব্যবহৃত পেভমেন্টের চেইনেজ কিলোমিটার ৭৩+৭০০ থেকে ৭৩+৮৫০ সহ বিভিন্ন জায়গায় ফাটল বা ক্র্যাক দেখা গেছে। এই ফাটল বা ক্র্যাক প্রদর্শিত এলাকা পুনরায় মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রকল্পের উভয় প্যাকেজের সড়ক বিভাজকে আগাছা দেখা গেছে। এছাড়া সড়ক বিভাজকের মধ্যে ইঁদুরের গর্ত দেখা গেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে দীর্ঘ সময়ে পানি নিষ্কাশন হতে থাকে, যা পেভমেন্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

ইঁদুরে বেহাল সড়ক বিভাজক, বিটুমিন ব্যবহারেও অবহেলা

প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, প্রকল্পের কাজ চলমান অবস্থায় যথাযথ কিউরিং করা হয় না বা সম্ভব হয় না বলে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কারণ এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা যার ওপর অধিক বহন ক্ষমতাসম্পন্ন যানবাহন চলাচল করে। এমনকি বিটুমিনের কাজ করার পর তিন-চার ঘণ্টা কিউরিং করার নিয়ম থাকলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় কিউরিং করা সম্ভব হয় না। প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের নিরাপত্তামূলক ড্রেস দেখা যায়নি। কর্মীদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামাদি ব্যবহারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো পেভমেন্টের ওয়ারিং কোর্সের পুরুত্ব। বিভিন্ন জায়গায় ওয়ারিং কোর্সের পুরুত্ব কোর কাটিংয়ের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়েছে এবং যথাযথ পাওয়া গেছে। পরিদর্শনকালে প্রকল্পের কাজের সাইটে কোনো সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন

আইএমইডির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সড়কের বিটওয়ারিং কোর্সের মেরামত করা জায়গায় পুনরায় হেয়ার লাইন ক্র্যাক দেখা দিয়েছে, সড়ক বিভাজকে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনগুলো মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে আছে- যা মেরামত করা দরকার। এছাড়া প্রকল্পের সাইটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাইন সিগনাল ও রাতে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। প্রকল্পের সাইট ল্যাবরেটরিতে বিভিন্ন ধরনের রেজিস্টার পরিপালন করা হচ্ছে না। প্রকল্পের মালামাল রাখার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা প্রস্তুত করা হয়নি।

প্রকল্পের চাহিদানুযায়ী যথা সময়ে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও অর্থ ছাড় করা হচ্ছে। ফলে প্রকল্পের কাজ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় সড়কের পাশে কাঁচা রাস্তায় মাটির কাজের সংস্থান রাখা হয়েছে; যার আংশিক কাজের অগ্রগতি দেখা গেছে। প্রকল্পে পলিমার মডিফাইড বিটুমিন একটি নতুন বিষয়, তবে এটি একটি পরিবেশবান্ধব বিটুমিন হিসেবে প্রমাণিত।

এছাড়া প্রকল্পটি নেওয়ার আগে প্রকল্পে ব্যবহৃত পলিমার মডিফাইড বিটুমিন আমদানি করা মালামালের তালিকায় না থাকায় মালামাল আমদানি করতে অধিক সময় ব্যয় হয়েছে। প্রকল্পের বিটওয়ারিং কোর্সের কাজ করার পর লেনে কিউরিংয়ের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই গাড়ি চলাচলের জন্য সড়ক চালু করতে হয়, যা কাজের স্থায়িত্বের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। প্রকল্পের সড়কের পেভমেন্টের বিভিন্ন জায়গায় হেয়ার লাইন ক্র্যাক দেখা দিয়েছে যেগুলো মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রকল্পের সড়ক বিভাজকের আগাছা পরিষ্কার করে ইঁদুরের গর্ত করা মাটি সরিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনগুলো মেরামত করা যেতে পারে। ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পাদন করে বাস্তবতার নিরিখে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) প্রণয়ন করতে হবে, যেন প্রকল্প সংশোধন পরিহার করে নির্ধারিত প্রাক্কলিত ব্যয় ও মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।

আরও পড়ুন

আইএমইডির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আইএমইডির প্রতিবেদন আমাদের হাতে এখনো আসেনি। সড়কের কাজে বিটুমিনের ব্যবহারে যদি অবহেলা ও অযত্ন দেখা যায় তবে আমরা ব্যবস্থা নেবো। তবে বিটুমিনের কোয়ালিটি ভালো। সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণে বিটুমিন সংরক্ষণ যাতে ভালো হয় সেই উদ্যোগ আমি নেবো। কারণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে বিটুমিন গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে সড়কের পানি দ্রুত নিষ্কাশন করে বিটুমিনের গুণগতমান ঠিক রাখা যায় সেই উদ্যোগও নেওয়া হবে।’

‘সড়কের মাঝখানে বড় বড় ঘাস আছে। যে কারণে ইঁদুরের উৎপাত বেশি। সব সময় ঘাস কেটে সড়ক বিভাজক পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করবো। তবে অনেক সময় ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তারপরও বিকল্প উপায়ে সড়ক বিভাজকের নিচ দিয়ে কীভাবে পানি নিষ্কাশন করা যায় সেই উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’- এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ

ইঁদুরের উৎপাতে ঝুঁকিতে সড়ক বিভাজক- এ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘বিষয়টি আমি আগেও দেখেছি। সড়কের মাঝখানে বড় বড় ঘাস আছে। যে কারণে ইঁদুরের উৎপাত বেশি। সব সময় ঘাস কেটে সড়ক বিভাজক পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করবো। তবে অনেক সময় ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তারপরও বিকল্প উপায়ে সড়ক বিভাজকের নিচ দিয়ে কীভাবে পানি নিষ্কাশন করা যায় সে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আইএমইডি যে সব জায়গায় গ্যাপ পেয়েছে সবগুলোই আমরা যত্নসহকারে পূরণ করবো।’

ইঁদুরে বেহাল সড়ক বিভাজক, বিটুমিন ব্যবহারেও অবহেলা

প্রকল্পের মূল ডিপিপি অনুযায়ী, সড়কের স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। সে মোতাবেক প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর প্রকল্পের এজ বিল্ট ড্রয়িং ঠিকাদার তা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করবে। যেহেতু এটা একটি নতুন পদ্ধতি তাই এ বিষয়ে সওজের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। ভবিষ্যতে প্রকল্প এলাকার সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য সওজ প্রয়োজনীয় জনবল, যন্ত্রপাতি ও অর্থ বরাদ্দ করে এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি সচল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সুপারিশ করেছে আইএমইডি।

আরও পড়ুন

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত ১৯২ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সড়ককে চার লেন মহাসড়কে জিওবি অর্থায়নে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নীত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২ জুলাই যানবাহন চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করেন। বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ রক্ষাকারী জাতীয় অর্থনীতির লাইফলাইন এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত মাত্রাতিরিক্ত ভারবাহী পণ্য বোঝাই যানবহন চলাচল করছে। ক্রমবর্ধমান পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহনের জন্য মহাসড়কটির পূর্ণ উপযোগিতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা প্রয়োজন। অত্যধিক সংখ্যক এবং অননুমোদিত ভারবাহী যান চলাচলের কারণে মহাসড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মহাসড়কটির পূর্ণ উপযোগিতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিতকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য ‘চার লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) (দাউদকান্দি- চট্টগ্রাম অংশ) এর ৪ (চার) বছরের জন্য পারফরম্যান্স বেইজড অপারেশন ও দৃঢ়করণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের মূল ডিপিপি ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ৭৯৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জুলাই ২০১৯ থেকে জুন ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। প্রথম সংশোধিত ডিপিপি ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর ৯৮০ কোটি ২৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। অর্থাৎ মূল ডিপিপির তুলনায় প্রথম সংশোধিত ডিপিপি ১৮৭ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ২৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন

প্রকল্পের প্রধান কাজগুলো হলো মাটির কাজ, সড়ক রাট কারেকশন কাজ, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজ এবং সড়ক নিরাপত্তামূলক কাজ ইত্যাদি। এই কাজ বাস্তবায়নের জন্য সংগৃহীত মালামাল পরিবীক্ষণে দেখা যায় যে, সওজের কারিগরি বিনির্দেশ (লেনে) মোতাবেক নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত মালামাল থার্ড পার্টি দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে গুণগতমান নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রকল্পের বিটুমিন ট্যাক কোট, ওয়্যারিং কোর্স (রাট ফিলিং), রাট ফিলিং বাই মিলিং মেশিনের কাজ, রোড মার্কিং ইত্যাদি কাজ চলমান। প্রকল্পের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত কাজের লক্ষ্যমাত্রা ৮০ শতাংশ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে অর্জিত হয়েছে ৭২ দশমিক ৫৩ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম এবং আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৭১১ কোটি টাকা।

এমওএস/এমএমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।