মাসজুড়ে থাকবে বন্যা, নিয়ন্ত্রণে নেই যথাযথ পরিকল্পনা
•• জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বেড়েছে বৃষ্টি
•• স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যার শঙ্কা
•• ক্ষতিগ্রস্ত হবে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলা
•• প্রস্তুতিতে তোড়জোড় নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। প্রতি বছর দুর্যোগের মুখোমুখি হয়ে নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই আমরা। এছাড়া বর্ষা এলে দেশে বেড়ে যায় বন্যার শঙ্কা। পাশাপাশি সাগরে লঘুচাপের ফলে সারাদেশে বেড়েছে বৃষ্টি। এই বৃষ্টি থাকবে জুলাইজুড়ে। ইতিমধ্যে জুনের শেষ দিকে শুরু করে সিলেট, ফেনী ও কুড়িগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন অঞ্চলগুলোর লাখো বাসিন্দা।
এদিকে এবারের বর্ষায় ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বন্যার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় জুলাইয়ে। তবে এবার বৃষ্টির পরিমাণ অন্য বছরের তুলনায় বেশি হবে এবং এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা হতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলে এ বন্যা পরিস্থিতি তীব্র হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
‘দেশে যে বৃষ্টিপাত হয়, সৃষ্ট বন্যায় সেটার প্রভাব কম। আমাদের দেশের নদীগুলোর উৎপত্তিস্থল ভারত ও মিয়ানমার। সেখানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আমাদের দেশে বন্যা হয়। ভারতের চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ে জুলাইয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে এই পানির চাপ আমাদের এখানেও আসবে।’- আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের দেশে এখনো স্বাভাবিক বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে। দেশে যে বৃষ্টিপাত হয়, সৃষ্ট বন্যায় সেটার প্রভাব কম। আমাদের দেশের নদীগুলোর উৎপত্তিস্থল ভারত ও মিয়ানমার। সেখানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আমাদের দেশে বন্যা হয়। ভারতের চেরাপুঞ্জি ও মেঘালয়ে জুলাইয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে এই পানির চাপ আমাদের এখানেও আসবে।’
আরও পড়ুন
- ভাঙা ঘরে জোড়াতালি দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বানভাসিরা
- কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
- বন্যায় পানির নিচে ঘরবাড়ি, ৪ দিন ধরে নৌকায় বসবাস বৃদ্ধ দম্পতির
জুলাইয়ের আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি মাসে মৌসুমি ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের কয়েকটি স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকার কয়েকটি স্থানে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মার পানি গোয়ালন্দ পয়েন্টে সতর্ক সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন যেহেতু বর্ষা মৌসুম, তাই প্রতি বছরই এ সময়ে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি বন্যা হয়। আমাদের গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর অববাহিকার মাত্র ১০ শতাংশ বাংলাদেশে। ৯০ শতাংশের বেশি পানি আসে ভারত থেকে। বর্ষা মৌসুমে এই পানি আসার প্রভাবে বন্যা পরিস্থিতি তীব্র হচ্ছে। বর্তমানে আটটি নদীর ২১টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা থাকবে এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে আগস্ট মাসেও বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।’
‘গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর অববাহিকার মাত্র ১০ শতাংশ বাংলাদেশে। ৯০ শতাংশের বেশি পানি আসে ভারত থেকে। বর্ষা মৌসুমে এই পানি আসার প্রভাবে বন্যা পরিস্থিতি তীব্র হচ্ছে।’- সরদার উদয় রায়হান, নির্বাহী প্রকৌশলী, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
ইতোমধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টিতে ডুবেছে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা ও সিলেট নগরীর নদী তীরবর্তী বিভিন্ন ওয়ার্ড। নদ-নদীর পানি বইছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। পানিবন্দি এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। সিলেটবাসীর এই ভোগান্তি চলতি জুলাইজুড়ে থাকার শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন
- সিরাজগঞ্জে ৪০৮ হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত
- পানি কমে ভেসে উঠছে ক্ষত চিহ্ন
- নেত্রকোনায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত
নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে কুড়িগ্রামে। এ এলাকায় ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ ছোটবড় সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে জেলার ৪২১টি চর-দ্বীপের ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি। নিম্নাঞ্চলের মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। জেলার ৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর বন্যা হওয়াটা এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে দেশে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যায় কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল, আন্তসীমান্ত নদীর পানি, অপরিকল্পিত অবকাঠামো, নদী দখল ও টেকসই বাঁধের অভাবে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। বন্যার মধ্যেই মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে শুরু হয়েছে তীব্র নদীভাঙন। বন্যার পূর্বাভাসে শুধু নদ-নদীর পানি বাড়া-কমা ও বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হবে কি না এটাই বলে। কিন্তু কোন এলাকায় কোন ফসলের ক্ষেত ভাসবে, কোন গ্রাম তলিয়ে যাবে, এগুলোর তথ্য আমাদের কাছে নেই। অথচ আমরা জানি প্রতি বছর দেশে বন্যা হবে।
‘শুধু ত্রাণ দিয়ে বন্যা ব্যবস্থাপনা হবে না’
জলবায়ু অর্থায়ন বিশেষজ্ঞ চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসাইন খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্ষায় বন্যা এখন দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করছে। বন্যা কখন আসবে, কী পরিমাণে পানি আসবে, কোন চ্যানেল দিয়ে আসবে- এ তথ্যটা আমরা যথাযথভাবে পাচ্ছি না। ভারত কোন সময় পানি ছাড়বে, আবার কোন সময় আটকাচ্ছে, সেটা নিয়ে আমাদের যৌথ নদী কমিশন কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখে না।’
‘বন্যা কখন আসবে, কী পরিমাণে পানি আসবে, কোন চ্যানেল দিয়ে আসবে- এই তথ্যটা আমরা যথাযথভাবে পাচ্ছি না। ভারত কোন সময় পানি ছাড়বে, আবার কোন সময় আটকাচ্ছে, সেটা নিয়ে আমাদের যৌথ নদী কমিশন কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখে না।’- এম জাকির হোসাইন খান, প্রধান নির্বাহী, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ
‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন নতুন ঝুঁকি আসছে। বৃষ্টিপাত বাড়ছে, কিন্তু বন্যার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই। আমরা এখনো আদিকালের মতো বন্যা ব্যবস্থাপনা করছি। বন্যার পর কৃষি অধিদপ্তরকে তাদের কাজ করতে হবে। একইভাবে মৎস্য অধিদপ্তর ও এলজিইডিকে তাদের কাজ করতে হবে। শুধু ত্রাণ দিয়ে বন্যা ব্যবস্থাপনা হবে না। বন্যার কারণগুলো নির্ধারণ করে সেগুলো বন্ধে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।’ বলছিলেন জাকির হোসাইন খান।
পানি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরিফ জামিল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের নদীগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত খাল ও জলাশয়কে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। পরিবেশগত অধিকার বিবেচনা না করে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমাদের আইনে কিন্তু আছে প্লাবন অঞ্চলের শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু দেখা যায়, রেললাইন ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে, অথচ সেটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহের সঠিক জায়গা রাখা হয় না। একইভাবে অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণ করায় এবং নদীর ড্রেজিং না করায় পানি লোকালয় থেকে বের হচ্ছে না। আমরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প করে প্লাবন অঞ্চলগুলো ভরাট করে ফেলেছি।’
আরও পড়ুন
- গাইবান্ধায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
- পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন অফিসে পানি, দাপ্তরিক কাজ বন্ধ
- কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে পানি, বিপৎসীমার ওপরে ধরলা-ব্রহ্মপুত্র
ঘুমিয়ে আছে যৌথ নদী কমিশন!
পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ যত পানি আসে সব ভারত থেকে আসা পানি, আন্তসীমান্ত নদীর পানি। আমাদের যৌথ নদী কমিশন কী করে জানি না। বর্ষায় আন্তসীমান্ত নদীর পানি কতটুকু আসবে, কোন পয়েন্ট দিয়ে আসবে, সেখানে সতর্কবার্তা, সেটা দেখার দায়িত্ব যৌথ নদী কমিশনের। অথচ তারা ঘুমিয়ে আছে।’
মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন, ‘তিস্তা ও যমুনা এক সময় এক কিলোমিটার চওড়া ছিল। এখন সেটা ভাঙতে ভাঙতে সাত কিলোমিটার চওড়া হয়েছে। এখানে অন্যতম কারণ হলো তিস্তা যমুনায় অসময়ের পানি আসা, যেটা ভারত থেকে আসে। ফলে নদীর পাড়গুলো ভেঙে আশপাশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।’
‘আমাদের নদীগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত খাল ও জলাশয়কে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। পরিবেশগত অধিকার বিবেচনা না করে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমাদের আইনে কিন্তু আছে প্লাবন অঞ্চলের শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু দেখা যায়, রেললাইন ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে, অথচ সেটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহের সঠিক জায়গা রাখা হয় না।’- শরিফ জামিল, সমন্বয়ক, ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ
‘উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হচ্ছে। এই পানিগুলো নামার যে জায়গা আছে, সেটা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সিলেটে বন্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের রাস্তা। এই রাস্তাগুলো পানি বের হওয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া পাহাড়ে গাছপালা নিধনের কারণে পানি সরাসরি চলে আসছে। নদীগুলো ড্রেজিংও হচ্ছে না। এসব বিষয়ে সরকারের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও প্রস্তুতি নেই। ফলে বছর বছর বন্যায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’, যোগ করেন মোহাম্মদ এজাজ।
‘দুর্যোগ সচেতনতা নিয়ে অনেক প্রকল্প’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা তো দুর্যোগ নিয়ে সচেতন করি। সচেতনতা নিয়ে আমাদের অনেক প্রকল্প রয়েছে। বন্যা ও এর নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাজ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। বন্যা হলে আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ত্রাণ থেকে শুরু করে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সব ব্যবস্থা করে থাকি। এগুলো পর্যাপ্ত কেন হবে না? জেলা প্রশাসন থেকে যে চাহিদা দেওয়া হয় আমরা সে অনুযায়ী দিয়ে থাকি।’
‘উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হচ্ছে। এই পানি নামার যে জায়গা আছে, সেটা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সিলেটে বন্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের রাস্তা। এই রাস্তাগুলো পানি বের হওয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’- মোহাম্মদ এজাজ, চেয়ারম্যান, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার
‘নদীর পানি কখনো ঠেকিয়ে রাখা যায় না’
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ নদী কমিশনের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সাঈদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ভাটির দেশ। যে কারণে আমরা বেশি ভুক্তভোগী। উজান থেকে পানি ভাটিতে আসবে, এটা স্বাভাবিক। এখানে ভিন্ন কিছু চিন্তা করার সুযোগ নেই। শুষ্ক মৌসুমে আমরা পানি পাই না, অথচ এখন তিস্তার পানিতে ভেসে যাচ্ছে। এটা একটা সমস্যা। বর্ষা মৌসুমে ৮৮ শতাংশ পানি আসে আমাদের আন্তসীমান্ত নদীগুলো থেকে।’
‘বন্যা একটা ন্যাচারাল ফেনোমেনা। বন্যার অনেক ফ্যাক্টর রয়েছে। নদীর পানি কখনো ঠেকিয়ে রাখা যায় না। আমরা যেটা করতে পারি সেটা হলো বন্যা ব্যবস্থাপনা। সরকার বন্যা পূর্ববর্তী, বন্যাকালীন ও বন্যা পরবর্তী তিনটি ধাপে কাজ করছে।’ বলছিলেন আবু সাঈদ।
আরএএস/এমএমএআর/এমএস