পিজিআরকে চেইন অব কমান্ডের প্রতি আস্থাশীল থাকতে হবে: রাষ্ট্রপতি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০১ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২৪
পিজিআরের দরবারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন/ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট’র (পিজিআর) সদস্যদের কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠায় অটল এবং চেইন অব কমান্ডের প্রতি আস্থাশীল থেকে অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

শনিবার (৬ জুলাই) বিশেষায়িত এই বাহিনীর ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদরদপ্তরের শহীদ ক্যাপ্টেন হাফিজ হলে অনুষ্ঠিত দরবারে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপতি এই নির্দেশ দেন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, মনে রাখবেন, দেশ ও জাতি যে মহান দায়িত্ব আপনাদের ওপর অর্পণ করেছে, সেই দায়িত্ব পালনে যেকোনো আত্মত্যাগ জাতির ইতিহাসে আপনাদের চিরস্মরণীয় করে রাখবে।

তিনি বলেন, সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিস্তৃত বহুমাত্রিক নিরাপত্তা, নতুন নতুন তথ্য প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে প্রয়োজন অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ।

মো. সাহাবুদ্দিন পিজিআর সদস্যদের স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, শৃঙ্খলা বজায় রাখা, আত্মোন্নয়নে মনোযোগী হতে এবং সর্বোপরি সৈনিক হিসেবে নিজের শারীরিক যোগ্যতাকে সর্বদা অক্ষুণ্ন রাখতেও উপদেশ দেন।

পেশাগত মান ও দক্ষতাকে আরও বিকশিত ও বিশ্বমানে পৌঁছাতে বিদ্যমান প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে প্রয়োজনে আরও জোরদার করার পরামর্শও দেন রাষ্ট্রপ্রধান।

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, একটি পেশাদার সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবে সমসাময়িক বাস্তবতার পাশাপাশি অতীত ইতিহাস ও ঘটনাপ্রবাহ থেকেও পিজিআরকে আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন।

পিজিআরকে চেইন অব কমান্ডের প্রতি আস্থাশীল থাকতে হবে: রাষ্ট্রপতি

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনটি প্রতিটি গার্ডস সদস্যের কাছে একটি বিশেষ দিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতেগড়া পিজিআরের সদস্য হিসেবে তারা দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করছেন। নিঃসন্দেহে এটি খুবই আনন্দ ও গৌরবের একটি বিষয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সাহাবুদ্দিন বলেন, দুঃখজনক হলেও এটি সত্যি যে, পিজিআর প্রতিষ্ঠার মাত্র ৪২ দিনের মাথায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্রের হাতে বঙ্গবন্ধু ও বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ তার পরিবারের সদস্যরা বিপদগামী একদল সেনা কর্মকর্তার নির্মম বুলেটের আঘাতে ধানমন্ডির ৩২নং বাড়িতে শহীদ হন। সেদিন আমরা আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টাকে রক্ষা করতে পারিনি, সেটা ছিল আমাদের অমার্জনীয় অপরাধ।

‘সেদিন যদি পিজিআর আজকের মতো সুসংগঠিত ও চৌকস হতো তাহলে হয়তো ঘাতক দল ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করতে পারতো না। বাঙালি ও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো। দেশ পরিণত হতো জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায়।’ যোগ করেন রাষ্ট্রপতি।

আরও পড়ুন

রাষ্ট্রপতি পিজিআর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, পিজিআরের ওপর অর্পিত দায়িত্ব একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ অন্যদিকে তেমন গৌরবময়। বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ছাড়াও অনেক দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছেন।

রাষ্ট্রপতি একটি সুশৃঙ্খল, পূর্ণাঙ্গ এবং স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টকে বর্তমান অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করার কারিগর হিসেবে প্রাক্তন সদস্যদের অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ কামাল ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদরদপ্তরের শহীদ ক্যাপ্টেন হাফিজ হলে পিজিআরের দরবারে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান।

রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিব, ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের কমান্ডার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন করেন এবং দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন। তিনি সেখানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি কেক কাটেন।

এসইউজে/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।