মহাখালী থেকে আনসার আল ইসলামের তিন সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২০ পিএম, ০৩ জুলাই ২০২৪
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মহাখালী থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিনজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. মামুন হোসেন, আবু বক্কর ও হাসিবুল ইসলাম। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (৩ জুলাই) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২ জুলাই রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা স্বীকার করেছে তারা জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মামুন হোসেন জানায়, সে অনলাইনে মুফতি জসিমউদ্দিন রহমানী ও তামিম আল আদনানির বক্তব্য শুনে উগ্রবাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। পরে সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে বিভিন্ন আইডির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আনসার আল ইসলাম সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করে। সংগঠনের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে ওসমান ও আবু কায়সার ওরফে রনির সঙ্গে মামুনের অনলাইনে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। রনি মামুনকে জানায় ‘পটাশিয়াম নাইট্রেট’ দিয়ে বিস্ফোরক বা বোমা বানানো যায়। সেই সঙ্গে আলীবাবা ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করার জন্যও মামুনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

ডিসি ফারুক হোসেন জানান, নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে একত্রিত হলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে এবং নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়। এ সংক্রান্তে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ২০১৯ সালে গেন্ডারিয়া থানায় একটি মামলা রুজু হয়। এ ঘটনার সহযোগী নাহিদ ফেরদাউস, মালয়েশিয়ায় এবং জ্যাক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় তখন তাদের চিহ্নিত কিংবা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

সে ঘটনার পর মামুন গ্রেফতার হয়। পরে কারামুক্ত হয়ে ২ জুলাই অপর গ্রেফতার আবু বক্করের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। মামুন আবু বক্করকে সংগঠনের নাহিদ ফেরদাউসের বিষয়ে বলে এবং নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দেয়। আবু বক্কর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে অনলাইনে নাহিদ ফেরদাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের জন্য বিদেশ থেকে আবু বক্করের কাছে নিয়মিত অর্থ পাঠায়।

আবু বক্কর এই অর্থ সংগঠনের কাজে ব্যবহার করে। নাহিদ ফেরদাউস সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য জ্যাকের সঙ্গে আবু বক্করকে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং জ্যাক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছে বলে জানায়। জ্যাক আনসার আল ইসলাম সংগঠনে নিয়মিত অর্থায়ন করে বলেও জানায়।

ফারুক আরও বলেন, গ্রেফতার আবু বক্কর অপর গ্রেফতার হাসিবুল ইসলামকে আনসার আল ইসলামের দাওয়াত দেয় এবং নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। হাসিবুল ইসলাম নাহিদ ফেরদাউস ও জ্যাকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর আড়ালে আনসার আল ইসলাম সংগঠনের সদস্যদের বিদেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করে এবং দেশে আনসার আল ইসলামের নেটওয়ার্ক স্থাপন করে। বিদেশে অবস্থানরত সংগঠনের সদস্যরা বাংলাদেশে নাশকতার পরিকল্পনা করে।

গ্রেফতাররা তাদের পলাতক সহযোগীদের নিয়ে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার নিমিত্তে সরকার ও রাষ্ট্রের জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও ক্ষতিসাধনের ষড়যন্ত্র করে। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থলে মিলিত হয়।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

টিটি/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।