‘শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তথ্যের সততা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ২৯ জুন ২০২৪

শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সবার আগে তথ্যের সততা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, ভিন্ন মত থাকা সমাজ ও গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু সত্য ও সঠিক তথ্যে সবাইকে একমত হতে হবে। সত্য আগে স্বীকার করতে হবে। এরপর ভিন্ন মতামত দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তথ্যই যদি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয় এবং এর মাধ্যমে যদি একটা চিন্তা তৈরি করা হয়-এটা ভালো, ওটা খারাপ তাহলে সেটা সমাজে কারও ভালো বয়ে আনবে না। কাজেই আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে যে, আমরা তথ্যের জায়গায় সততা নিশ্চিত করবো।

শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ-এর কনভেনশন হলে পিস অ্যাম্বাসেডর’স জাতীয় সম্মেলন ২০২৪ এ প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের উদ্যোগে, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) সহযোগিতায় এবং ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমসের অংশীদারত্বে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য যাচাই-বাছাই করা আমাদের দায়িত্ব। সত্য মেনে নেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে এবং রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে তথ্য বিকৃত করলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না।

তিনি বলেন, আগে অঙ্গীকার করতে হবে যে, আমি যে রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাস করি না কেন তথ্যের জায়গায় আমি আমার সততা নিশ্চিত করতে চাই। সত্য কারও পক্ষে যাবে, কারও বিপক্ষে যাবে। সত্য যেদিকেই যাবে সেটা মেনে নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের রাজনীতিতে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে এমন কিছু ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটে গেছে ও ঘটানো হয়েছে যে কারণে বাংলাদেশের রাজনীতি আজ দাঁড়িয়ে আছে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের ওপরে। বাংলাদেশে ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের মতো ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের রক্তের ইতিহাস আছে। তার ওপর দিয়ে বিভক্তি ও দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হওয়ার অনেক কারণ আছে। তবে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত দল-মত নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে পেছনে নিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে ভিন্ন মত থাকা প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিযোগিতা হবে ইতিবাচক, নেতিবাচক নয়। নিজের সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে, নিজের শ্রম, মেধা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন প্রতিটি ব্যক্তি পর্যায়ে, দলগত এবং গোষ্ঠী পর্যায়ে। যদি আমরা ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি করতে পারি তাহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশের জন্ম এবং আজ এ দেশের এগিয়ে যাওয়া। সেই মূল জায়গায় কোনো আপস চলবে না। বাংলাদেশের জন্ম যেখানে, যে চেতনা ধরে, সেখানে কোনো আপস চলবে না। তার বাইরে আমাদের সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের গোড়ায় গিয়ে সব দল-মত নির্বিশেষে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যে অপশক্তি, মৌলবাদী যে অপশক্তি, সেই ধরণের উগ্রবাদী কোনো অপশক্তিকে আমরা গণতান্ত্রিক পরিবেশে কোনো জায়গা দিতে চাই না। কারণ তারা গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তি বিনষ্ট করে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অপশক্তিগুলোকে বাদ দিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী যোগ করেন, আশা করি আগামী দিনে আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশকে দেখিয়ে দিতে পারবো যে এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে, মতবিরোধ আছে, ভিন্ন মত আছে, কিন্তু শান্তিও প্রতিষ্ঠিত আছে। দ্বন্দ্ব-সংঘাতের বাইরে আমরা রাজনীতিকে নিতে পারবো বলেও আশা করি। ভিন্ন মত, তর্ক-বিতর্ক সবকিছু থাকবে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি আমরা তর্কের যুদ্ধ, কথার যুদ্ধ করবো। আমাদের মধ্যে ভিন্ন মতের জায়গা থাকবে, কিন্তু কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত-সহিংসতায় জড়ানো ঠিক হবে না। এগুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রানা মো. সোহেল, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ অনেকে।

আইএইচআর/এমআইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।