এমপি আনার হত্যা
হিন্দু সেজে ২৩ দিন পাহাড়ের মন্দিরে ছিলেন ফয়সাল-মোস্তাফিজ
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যার ঘটনায় খাগড়াছড়ির দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার ফয়সাল ও মোস্তাফিজ হিন্দু সেজে ২৩ দিন পাতাল কালী মন্দিরে লুকিয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বুধবার (২৬ জুন) বিকেলে খাগড়াছড়ি থেকে দুই আসামিসহ হেলিকপ্টারে রাজধানীর পূর্বাচলে নেমে এসব তথ্য জানান ডিবিপ্রধান।
ডিবিপ্রধান বলেন, নাম-পরিচয় গোপন করে খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দির এলাকায় হিন্দু সেজে লুকিয়ে ছিলেন গ্রেফতার ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। তারা পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম ধারণ করেছিলেন। হিন্দু সেজে তারা ২৩ দিন ওই মন্দিরে ছিলেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (২৫ জুন) খবর পাওয়া যায় খাগড়াছড়ি দুর্গম পাহাড়ে লুকিয়ে রয়েছে পলাতক ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। খবর পেয়ে ডিবির একটি টিম আগেই পাহাড়ে গিয়ে অভিযান শুরু করে। পরে আজ আমরা গিয়ে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করি।
হারুন অর রশীদ বলেন, অজ্ঞান করার জন্য এমপি আনারের নাকে ক্লোরোফোম দেন ফয়সাল। আর মোস্তাফিজ এমপি আনারকে উলঙ্গ করে চেয়ারে বেঁধে রাখে। কিলার শিমুল ভূঁইয়ার মূল দুই সহযোগী ছিলেন তারা।
খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দির এলাকায় হিন্দু সেজে পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম ধারণ করেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। নাম-পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে সেই কালীমন্দিরেই থাকতেন দুজন। হিন্দু সেজে গ্রেফতার দুজন ২৩ দিন ওই মন্দিরে ছিলেন। এমপি আনারকে হত্যার পর ১৯ মে ফয়সাল ও মোস্তাফিজ দেশে ফেরেন।
গত ১৯ মে রাতে আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে কথা বলেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। শাহীন তাদের ৩০ হাজার টাকা দেয়। এরপর তারা দুর্গম পাহাড়ের ওই মন্দিরে চলে যান। তাদের রিমান্ডে নিয়ে আরও তথ্য-উপাত্ত বের করা হবে, যোগ করেন হারুন।
আরও পড়ুন
হারুন বলেন, কলকাতার যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয় সেই কিলিং মিশনে ছিলেন সাতজন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিমুল ভূঁইয়ার পরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তি হলো ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা আমাদের এখন মূলকাজ। এছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে আমরা আইনের আওতায় আনবো। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে মিলিয়ে মোট নয়জন গ্রেফতার হলেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ডিবির কোনো চাপ আছে কি-না জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, না এখন পর্যন্ত কোনো চাপ নেই। যাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে শুধু তাদের আইনের আওতায় আনছি। কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হবে না। আবার কোনো দোষী ব্যক্তিকে কেউ চাপ দিয়ে ছাড়াতে পারবে না।
এর আগে বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
টিটি/এমএএইচ/জিকেএস