কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে পরস্পর বিরোধী অবস্থানে দুই এমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৪ পিএম, ২৩ জুন ২০২৪

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া নিয়ে পরস্পর বিরোধী অবস্থান তুলে ধরেছেন দুই সংসদ সদস্য। জাতীয় পার্টির এমপি মাসুদ উদ্দীন চৌধুরীর দাবি, এতে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন।

অন্যদিকে কিশোরগঞ্জের স্বতন্ত্র এমপি সোহরাব উদ্দিন বলেন, এত বেশি কর দিয়ে কেউ কালো টাকা সাদা করবে না।

এজন্য তিনি ৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান।

রোববার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় এসব কথা বলেন দুই এমপি।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতে সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত, আর যারা কর দেন না কালো টাকার মালিক তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

এসময় তিনি এটি কোন বিবেচনায় যুক্তিসঙ্গত বলে প্রশ্ন করেন।

মাসুদ উদ্দিন বলেন, কালো টাকা দুই রকম। একটা বেশি কালো আরেকটা কিছু কম কালো। যেটা অর্জনের রাস্তা বৈধ, কিন্তু কর দেননি— যেমন চিকিৎসক, আইনজীবীদের আয়। এটা কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া যায়। কিন্তু যার অর্জনের রাস্তাই অবৈধ, সেটাকে কোনোভাবেই বৈধতা দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে দিতে হলেই জরিমানা দিয়ে এবং বিনিয়োগের শর্ত দিয়ে তা করা যেতে পারে।

তিনি দাবি করেন, মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়ে একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করছে। তার অংশ হিসেবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে লেখালেখি হচ্ছে। এটা এমনভাবে লেখা হচ্ছে যেন বিশাল ভুল হয়ে গেছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক ও বর্তমান স্বতন্ত্র এমপি সোহরাব উদ্দীন বলেন, এর আগে ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কেউ টাকা সাদা করেনি। ১৫ শতাংশ কর দিতে হলে কেউ অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করবে না। এটি ৫ শতাংশ করা হলে বিপুল অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করবে মানুষ।

এই সংসদ সদস্য বলেন, দেশে এখন বড় ব্যাধি দুর্নীতি। উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতিও বেড়ে গেছে। দুর্নীতির লাগাম টানা না গেলে উন্নয়ন ধরে রাখা যাবে না। দেশ বাঁচাতে হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হবে। ব্যাংকে দুর্নীতি বেড়ে গেছে। ব্যাংকের পদস্থ কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান তারাই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। উদাহরণস্বরূপ বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু হাজার কোটি টাকা নিয়ে বিদেশ চলে গেছেন। তার বিচার হয়নি।

সোহরাব উদ্দিন বলেন, তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকে টাকা নেই। কিছুদিন আগে কিছু দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু তা এখনো কার্যকর হয়নি। গ্রাহকরা টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে এভাবে ব্যাংকের নাম প্রকাশ করায় ব্যাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ফান্ড শূন্য হয়েছে।

তিনি বলেন, কিছু ব্যক্তি পুঁজিবাজারে এসে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে চলে গেছে। তারা পরিচিত মুখ। পুঁজিবাজার নিয়ে ভাবতে হবে। ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন চরম চাপে। এ বিষয়ে সমাধান তো দূরের কথা এ বিষয়ে বাজেটে আলোচনাই হয়নি।

আইএইচআর/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।