ঢাকায় হঠাৎ বৃষ্টিতে পশুর হাটে ভোগান্তি
রাজধানীতে হঠাৎ বৃষ্টিতে পশুর হাটগুলোতে জমে গেছে পানি। এতে বিপাকে পড়েছেন ব্যাপারীরা। হাটে আনা গরুগুলোও দুর্ভোগে পড়েছে। পানির কারণে তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ব্যাপারীরা গরু বেচাকেনা না করে বালতি দিয়ে পানি নিষ্কাশনে ব্যস্ত। বৃহস্পতিবার গাবতলী, মোহাম্মদপুর, বছিলা হাটে দেখা যায় এমন চিত্র।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাবতলী পশুর হাটের স্থায়ী জায়গায় পানি জমেনি। তবে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গাবতলীর হাট সম্প্রসারণ করতে হয়। সম্প্রসারিত স্থানগুলোতে জমে আছে পানি। অনেক গরু কাদা পানিতে দাঁড়িয়ে। আবার কোনো কোনোটা বৃষ্টিতে ভিজছে।
মানিকগঞ্জ থেকে ১৫টি গরু নিয়ে গাবতলীর হাটে এসেছেন মাতবর ব্যাপারী। তিনি কোদাল দিয়ে কখনো বালির বাঁধ দিচ্ছেন, আবার কখনো নালা কেটে বৃষ্টির জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করছেন।
মাতবর ব্যাপারী বলেন, হঠাৎ বৃষ্টিতে মাঠে পানি জমে গেছে। গরু নিয়ে মহাবিপদে পড়েছি, ক্রেতাও নাই।
অপরদিকে মোহাম্মদপুর-বছিলা হাট ঘুরে দেখা গেছে, এখানে বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পানি জমেছে। কোথাও পানি সরাতে বালু ফেলা হচ্ছে। আবার কোথাও পানির মধ্যে গরু বেঁধে রাখা হয়েছে। হাটের পথে পথে বৃষ্টির পানি জমে কাদা হয়ে গেছে। এতে মানুষের চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক ব্যাপারী বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার।
আরও পড়ুন:
এসময় দেখা গেলো পলিথিন কিনে বাঁশের খুঁটি দিয়ে বৃষ্টির পানি আটকানোর চেষ্টা করছিলেন পাবনার মজনু। তার ১৫টি গরু বৃষ্টিতে ভিজে একাকার। তিনিও ভিজছেন।
আক্ষেপ করে এই ব্যাপারী বলেন, 'বৃষ্টির পানিতে আমাদের কষ্টের সীমা নাই। বৃষ্টির জন্য নিজেও ভিজি গরুও ভেজে।'
তিনি আরও বলেন, 'হাটে পর্যাপ্ত টয়লেটও নেই।'
বছিলা-মোহাম্মদপুর হাটের ভেতরের অবস্থা আরও বেহাল। এখানে অধিকাংশ গরু পানিতে দাঁড়িয়ে। গরু যাতে একটু ঘুমাতে পারে সেজন্য তাদের পায়ের নিচে বালি দেওয়া হচ্ছে।
পাবনার সিরাজ, মিরাজ, জাহিদ ও জহিরুল- এই চারজন ৩০টা গরু হাটে তুলেছেন। বৃষ্টিতে তাদের সব গরু ভিজে একাকার। তাদের বিশ্রামের জায়গা নেই। সেজন্য বালতি দিয়ে সবাই এক সঙ্গে গরুর পায়ের নিচের পানি নিষ্কাশন করছেন।
বৃষ্টির কারণে হাটে ক্রেতা কম বলেও দাবি করেছেন ব্যাপারীরা। কুষ্টিয়ার হাবিব ব্যাপারী বলেন, 'ভাই বিষ্টিতে কিতা (ক্রেতা) আসে না। বিষ্টিতে জিইজে গেছি। গরু বাছর কাক ভিজা। আমিও পানিতে।'
বৃষ্টির পানির কারণে বিপাকে পড়েছেন কিছু ক্রেতাও। তাদের মধ্যে একজন আরিফুল ইসলাম। তিনি মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান থেকে হাটে এসেছেন।
তিনি বলেন, বৃষ্টির দিনে সবার সমস্যা। হাটে চলাফেরা করা মুশকিল। মাটির রাস্তা হওয়ার কারণে কাদায় চলাচল করা যায় না।
এমওএস/জেডএইচ/জেআইএম