পরিবেশ ধ্বংসের মাধ্যমে নগরায়ণ হচ্ছে: স্থপতি ইকবাল হাবিব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৪ পিএম, ১২ জুন ২০২৪

বাপার সহ-সভাপতি স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, বাংলাদেশে নগরায়ণ সংকটের সম্মুখীন। দেশব্যাপী ক্রমাগত দখল এবং দূষণে শহরগুলোর সবুজ ও জলজ অংশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের শহরগুলোতে উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও চিত্তবিনোদনের মুক্ত সুযোগ অপসৃত হচ্ছে। পরিবেশের সঙ্গে সহাবস্থান নয় বরং পরিবেশ ধ্বংসের মাধ্যমেই দেশে নগরায়ণ প্রক্রিয়া ধাবিত হচ্ছে।

বুধবার (১২ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) উদ্যোগে ‘স্থায়িত্বশীল নগরায়ণে পরিবেশের গুরুত্ব পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ক সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব পুস্তিকার উন্মোচন’ শিরোনামে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ইকবাল হাবিব আরও বলেন, এককালের ছিমছাম, উদ্যান ও পার্ক সমৃদ্ধ, খাল-ঝিল ও পুকুরে পরিপূর্ণ, সবুজ ও সজল এই শহরগুলো সময়ের সঙ্গে স্বস্তিতে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এসময় তিনি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।

বুয়েটের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম বলেন, নগর কর্তৃপক্ষের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলোর কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে তার মূল্যায়ণ ও জবাব চাওয়া দরকার। এসডিজি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় এলিমেন্টসগুলো লক্ষ্য করে দেখা যাচ্ছে, আমরা অনেক পিছিয়ে আছি এসডিজির লক্ষ্য অর্জন থেকে।

ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, একটি শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই বায়ুদূষণের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশের নাগরিকের গড় আয়ু কমছে ৬ বছর ৮ মাস। পরিবেশ মন্ত্রীর ১০০ দিনের কর্ম পরিকল্পানার কথা বলা হলেও কার্যত কোনো কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না। পরিবেশগত সুশাসন প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

বাপার সহ-সভাপতি মহিদুল হক খান, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এসময় বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে তুলে ধরা প্রস্তাবনা ও দাবিগুলো হলো

> নগর এলাকাসমূহের পাশাপাশি সব সড়ক ও মহাসড়কে বৃক্ষশুমারি পরিচালনা এবং বৃক্ষ সংক্রান্ত ডাটাবেজ প্রণয়নের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক প্রকল্প বা কর্মকাণ্ডের অজুহাতে বৃক্ষ কর্তন নিয়ন্ত্রণ করা।

> বন ও বনভূমি সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তর/কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

> কার্যকর সবুজায়ন নীতিমালার ভিত্তিতে সংরক্ষণ নিশ্চিত করে ভারসাম্যপূর্ণ এবং দেশজ বৃক্ষরোপণ ও লালনের কর্মসূচি নেওয়া।

> নগরব্যাপী বিদ্যমান পুকুর, খাল এবং অন্যান্য জলাশয় পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণপূর্বক নগরীর বাসযোগ্যতা উন্নয়নে সমন্বিতভাবে ‘নীল অন্তঃসংযোগ’ গড়ে তোলার পাশাপাশি নদীর সঙ্গে তাদের সংযোগ স্থাপনের প্রয়োজনীয় আশু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

> সমীক্ষানির্ভর নীতিমালা প্রণয়ন এবং প্রণোদনা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে নগর দর্শন নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী ও সংস্থাগুলোকে নিয়ে আশু উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, হাসান ইউসুফ খান, হুমায়ুন কবির সুমন ও বাপা নির্বাহী কমিটির সদস্য জাভেদ জাহান প্রমুখ।

আরএএস/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।