হজযাত্রায় প্লেন ভাড়া কমাতে কমিটি গঠনের দাবি হাবের
স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে হজযাত্রীদের প্লেন ভাড়া কমানো ও ভাড়া নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছেন হজ্জ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।
সোমবার (১০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তিনি। ২০২৪ সালে হজ কার্যক্রম সমাপ্তি উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে হাব।
হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এয়ারলাইন্স ও ফেলাইনাস হজযাত্রী পরিবহন করে। কিন্তু হজযাত্রী পরিবহন ভাড়া আশপাশের দেশ থেকে অনেক বেশি। এ ভাড়া কমানোর জন্য এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি করা জরুরি। এতে হজযাত্রীদের ওপর চাপ কমবে।
সংবাদ সম্মেলনে ইতিহাসের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার হজযাত্রা সবচেয়ে সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করেন হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম। এসময় তিনি হজযাত্রীদের সরাসরি এজেন্সির ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা দিয়ে মানি রশিদ সংরক্ষণ এবং প্যাকেজের সুবিধাদি লিখিত চুক্তি করা, ফ্লাইট শিডিউল নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাবের সঙ্গে আলোচনা করার সুপারিশ দেন।
এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ সরকার এবং সউদি রাজকীয় সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক হজচুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশের জন্য এ বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর কোটা বরাদ্দ হয়। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১৭ হাজার কোটা বরাদ্দ হয়। এ বছর ২৫৯টি হজ এজেন্সি অপারেটিং হজ এজেন্সির দায়িত্ব পালন করছে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য কোরবানি ছাড়া সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্য জন প্রতি মোট ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা।
তিনি বলেন, এবার হজযাত্রা সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করেছে হাব। কোন তারিখে কতজন গেলেন, কতজন টিকিট কেটেছেন, কতজনের ভিসা হয়েছে বা হয়নি এগুলো তদারকি করেছি। এখন একইভাবে সৌদি আরবে হাবের মনিটরিং টিম কাজ করছে। হাজিদের তারা সেবা দিচ্ছেন।
এবার হজ ক্যাম্প থেকে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ সার্ভিসের আওতায় এ বছর হজযাত্রীদের কষ্ট লাঘবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গমন করা সব হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন সৌদি আরবের পরিবর্তে ঢাকা থেকেই সম্পন্ন হয়েছে। এতে কষ্ট লাঘব হয়েছে হজযাত্রীদের।
মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ কার্যকর হওয়ার পর থেকে হজ ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়েছে বলে জানান হাব সভাপতি।
তিনি বলেন, তবে মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতের ময়দানে হাজিদের কিছুটা কষ্ট হবে। এই কষ্টের জন্য হাজিদের প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ হজকে জিহাদের সমপর্যায়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
হাব সভাপতি বলেন, হজ এজেন্সির লাইসেন্স প্রদান করে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে হাবের কোনো ভূমিকা থাকে না। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় যাকে লাইসেন্স দেয় হাব উক্ত লাইসেন্সধারী এজেন্সিকে সদস্য করতে বাধ্য। নতুন লাইসেন্স প্রদান ও মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে হাবের মতামত নেওয়া একান্ত সমীচীন হবে।
এবছর ভিসা ও টিকিট ইস্যুর অনিশ্চয়তা ছিল জানিয়ে হাব সভাপতি বলেন, আল্লাহর রহমতে, প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায়, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হাবের যৌথ প্রচেষ্টায় নিবন্ধিত হজযাত্রীদের প্রায় সব ভিসা ও টিকিট ইস্যু সম্ভব হয়েছে। সামান্য কিছু হজযাত্রী প্রতিবছরই অসুস্থতা, মৃত্যুজনিত কারণ বা অন্যান্য ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় গমন বাতিল করেন। সব মিলিয়ে এবার হজ যাত্রা সুষ্ঠু হয়েছে।
এমএমএ/জেডএইচ/জিকেএস