‘উপকূল উন্নয়ন বোর্ড’ গঠনের দাবি এমপি বদিউজ্জামানের
উপকূলবর্তী এলাকা ও মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য আলাদাভাবে ‘উপকূল উন্নয়ন বোর্ড’ গঠন করার দাবি জানিয়েছেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ।
তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষা করে আমরা উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যেতে চাই। সেজন্য সংসদেও আমি উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠনের জোরালো দাবি জানিয়েছি। কারণ উপকূল অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও সম্ভাবনাময় এলাকা। আমরা যদি লবণাক্ত পানিকে আটকে দিতে পারি তাহলে কৃষিকাজকে সম্প্রসারিত করতে পারবো। তখন আর রিলিফের দরকার হবে না। নিজেরাই ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।
মঙ্গলবার (৪ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘উপকূলে ঘূর্ণিঝড় রিমাল পরবর্তী পরিস্থিতি ও জরুরি করণীয়’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ উদ্যোগে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংসদ সদস্য বলেন, উপকূলীয় এলাকার পুকুর, খাল এবং জলাধারগুলো পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় এখন আর গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন
এই মুহূর্তে সুন্দরবন, শরণখোলা এবং মোংলার মধ্যবর্তী ভোলা নদী সম্পূর্ণরূপে ভরাট হয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন এই নদী খনন করা হয়েছিল। কিন্তু তখন মাটি নদীর পাড়ে রাখা হয়েছিল। সেগুলো নদীতে পড়ে এখন সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে গেছে।
আশঙ্কার কথা হচ্ছে, এই নদী ব্যবহার করে মানুষজন এখন অবাধে সুন্দরবনে যাতায়াত করছে। জরুরি ভিত্তিতে এই নদী খনন করা দরকার। একইসাথে খনন করা মাটি সুন্দরবনে ফেলা যাবে না। তাহলে ম্যানগ্রোভের বৈশিষ্ট্য নষ্ট হবে। এই মাটি ফেলতে হবে বসতিপূর্ণ এলাকায়। এটি বর্তমানে খুবই জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকায় কৃষিকে সমৃদ্ধ করতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনকে (বিএডিসি) আরও জনবল বাড়াতে হবে। সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা বিশেষ করে খুলনা, বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরায় প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে হবে।
কারণ এসব প্লাস্টিক জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে সুন্দরবনে জড়ো হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধান করতে জলবায়ু পরিবর্তন খাত থেকেও বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।
একই অনুষ্ঠানে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে যে ক্ষতি হয়েছে সেটি কখনো কাটিয়ে ওঠার মতো নয়। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীতে আমরা একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে ত্রাণ দিতে যাওয়ার সময় নদীতে অসংখ্য হরিণের মরদেহ ভেসে যেতে দেখেছি। যদিও বন বিভাগ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের কথা বলেছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে এটি আরও বেশি হবে। গহীন জঙ্গলে যে পশু পাখি মারা গেছে সেগুলোর কোনো হিসাবই নেই।
তিনি বলেন, নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ আটকে দেওয়ার কারণে সমস্যা বাড়ছে। প্রকৃতি কখনও অত্যাচার সহ্য করে না। আমরা গাছপালা কেটে, নদী ভরাট করে যে অত্যাচার করছি তার শোধ হিসেবেই বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘনিয়ে আসছে। প্রকৃতিক স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের যে প্রবৃদ্ধিগুলো হচ্ছে সেগুলো ধরে রাখতে পারছি না। সংকট এখানেই।
আরএএস/এমআরএম/এমএস