সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, জেলেদের উপকূলের কাছে থাকার নির্দেশ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
একই সঙ্গে গভীর সাগরে বিচরণ করা জেলেদের নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এক সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর এ কথা জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপ সামান্য উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।
প্রাকৃতিক নানান কারণে সমুদ্রের কোনো কোনো স্থানে কেন্দ্রাভিমুখী ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল বা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে এ ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলটি শক্তি সঞ্চয় করে (বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে) সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও শেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সুস্পষ্ট লঘুচাপ হচ্ছে ঘণ্টায় ৩১ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগের ঝোড়ো হওয়ার অঞ্চল। নিম্নচাপ হচ্ছে একটি ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চল, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪১ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। গভীর নিম্নচাপের ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ৫১ থেকে ৬১ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে।
কোনো ঝোড়ো হাওয়ার অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে বলে ঘূর্ণিঝড়।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপ শুক্রবারের (২৪ মে) মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর এটি উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে আরও ঘনীভূত হয়ে শনিবার (২৫ মে) নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এরপর এটি উত্তর দিকে এগিয়ে রোববার (২৬ মে) প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারতের আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড়ে পরিণতি হলে এর নাম হবে 'রিমাল'। এ নামটি ওমানের দেওয়া। এর অর্থ বালু।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ১৩ দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে।
সাগরের সুস্পষ্ট লঘুচাপ থাকলেও দেশব্যাপী তীব্র গরম বিরাজ করছে। বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা বেড়ে তাপপ্রবাহের আওতা এবং তীব্রতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আগামীকাল শুক্রবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আরএমএম/কেএসআর/জিকেএস