স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু বিষয়ক তথ্যে অসংগতি: মেয়র তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ১৯ মে ২০২৪
ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের তথ্যে নানাবিধ অসংগতি থাকে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

রোববার (১৯ মে) নগর ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন এ মন্তব্য করেন তিনি। শেখ তাপসের দায়িত্বভার গ্রহণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ৪ বছর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের তথ্যে নানাবিধ অসংগতি থাকে। ফলে এডিস মশার প্রজননস্থল নিধন কার্যক্রমে আমাদের সময়ক্ষেপণ হয় এবং প্রকৃত রোগী খুঁজে বের করতে বেশ বেগ পেতে হয়। তারপরও আমাদের গভীর তদারকির ফলে আমরা সব রোগীর বাসাবাড়ি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকি।

তিনি বলেন, এমন একজন রোগীও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার বাসাবাড়িতে আমরা যাইনি এবং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হয়নি। এভাবে যাচাই-বাছাই শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় নয় হাজার ৭৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি। তখন সারাদেশে রোগী ছিল দুই লাখ ৭১ হাজার ১৭৫ জন, যা সারাদেশের মোট রোগীর মাত্র তিন দশমিক ৬০ শতাংশ। ফলে সফলতার সঙ্গে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।

যদিও গত বছর (২০২৩) দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। কেবল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে যত মৃত্যু হয়, তা আগের ২২ বছরে হয়নি। অর্থাৎ আগের ২২ বছরের চেয়ে গত বছর রোগীর সংখ্যা ছিল বেশি।

আরও পড়ুন

গত বছর দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে আক্রান্ত হন এক লাখ ১০ হাজার আট জন। আর বাকি দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন আক্রান্ত হন ঢাকার বাইরে। এছাড়া গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই ৯৮০ জন মারা যান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের পর ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। এ সময় মেয়র তাপস বলেন, ৪০ বছরের কাজ আমরা চার বছরে সম্পূর্ণ করেছি। আমরা কথায় বিশ্বাসী না, কাজে বিশ্বাসী। এটা এখন ঢাকাবাসী জানে, দেশবাসী জানে। সংখ্যায় বা পরিসংখ্যানে এখানে ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে।

ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনকে ইঙ্গিত করে তাপস বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কাজটি মাঠপর্যায়ে অত্যন্ত দুরূহ। আপনার বাসার ছাদে পানি আটকে আছে কি না সেটা আমার দেখতে হচ্ছে, আপনাকে দেখতে হচ্ছে না। এই কাজটা কতটা দুরূহ। ২০১৯ সালের আগে কিংবা ২০১৯ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এডিস মশা নিয়ে কেউ সেই কর্ম পরিকল্পনা নেয়নি, চিন্তাও করতে পারেনি। আমরা গত চার বছরে যা করেছি।

মেয়র তাপস বলেন, গত চার বছর কীটনাশকের মান নিয়ে আমাকে কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করেননি। এই কীটনাশকের মান ধরে রাখা কতটা দুরূহ, সেটা আমরা করতে পেরেছি। সুশাসন নিশ্চিত হয়েছে। আমাদের ক্রয় বিভাগ, আন্ডার বিভাগ নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ প্রশ্ন করেনি। আমাদের মশক নিধন কার্যক্রম নিয়ে এখন আর কেউ প্রশ্ন করে না। আগে তো পদে পদে সেই প্রশ্ন। তাই রোগী সংখ্যা কত হলো না হলো সেটা কিন্তু নির্ণয়ের বিষয় না। বিষয় হলো আমার কর্মপরিকল্পনা এবং আমার ব্যবস্থাপনা নিয়ে, আমি ঢাকাবাসীকে সেবা দিতে পারছি কি না।

মেয়র তাপস বলেন, আজ এখন পর্যন্ত কোনো রোগী বলতে পারবে না যে তার বাসায় আমার মশককর্মী যাননি, আমার কাউন্সিলররা যাননি। সুতরাং সংখ্যা দিয়ে এর সফলতা নির্ণয় করা যাবে না। আমি সেটাই বোঝাতে চেষ্টা করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের হিসাবে ২০২৩ সালে দক্ষিণ সিটিতে নয় হাজার ৭৬৩ জন স্থানীয় রোগীকে শনাক্ত করেছি। বাকি সবই হলো ঢালাওভাবে।

এমএমএ/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।