২০৫০ সালের মধ্যে পুরোপুরি ব্রডগেজে যাবে রেল

মো. নাহিদ হাসান
মো. নাহিদ হাসান মো. নাহিদ হাসান , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৭ পিএম, ১৮ মে ২০২৪

সম্প্রতি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা বেড়েছে। এজন্য দায়ী করা হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ সিগন্যাল ব্যবস্থা। রেল এগিয়ে নিতে আবার নানামুখী উদ্যোগও আছে। সার্বিক বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. নাহিদ হাসান

জাগো নিউজ: রেলের ডিজিটাল সিগন্যাল ব্যবস্থার অগ্রগতি কতদূর?

সরদার সাহাদাত আলী: পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কুপিবাতি পুরোনো হলেও এটি কার্যকর এবং পরীক্ষিত একটি সিগন্যাল ব্যবস্থা। ডিজিটাল সিস্টেম চালু করা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। আব্দুল্লাহপুর থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ডিজিটাল সিগন্যাল সিস্টেমের টেন্ডার হয়েছে। এটি মূল্যায়ন পর্যায়ে আছে। পদ্মা রেললাইন প্রজেক্টে জুন মাসের মধ্যে ডিজিটাল সিস্টেম চালু করে দেবে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনে রয়েছে। টঙ্গী, জয়দেবপুর, দিনাজপুর, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব-পশ্চিম এসব জায়গায় নন-ইন্টার লকিং প্রজেক্টের কাজ হচ্ছে। তাদের সবারই কাজের প্রজেক্ট শেষ যাবে। কাজ শেষ হলে এগুলো ইন্টার লকিংয়ের মধ্যে চলে আসবে, তখন আর এ সমস্যা থাকবে না। তাই পর্যায়ক্রমে সবগুলোই আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।

জাগো নিউজ: রেলে প্রশিক্ষিত জনবলের সংকট কবে নাগাদ কাটতে পারে?

সরদার সাহাদাত আলী: দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া সম্ভব নয়। জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। কর্মচারীরা অবসরে যাবে আবার নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে, তাদের প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে- এটা একটা নিয়মিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে।

২০৩০ সাল পর্যন্ত মিটার গেজের জন্য লোকোমোটিভ সংগ্রহ করবো। ২০৩০ সালের পরে এই ইঞ্জিন আর সংগ্রহ করা হবে না। ২০৫০ সালের মধ্যে মিটার গেজ অবলুপ্ত করে সম্পূর্ণটাই ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে।

জাগো নিউজ: ১৯৫৩ ও ১৯৬৮ সালের লোকোমোটিভ দিয়ে ট্রেন চলায় সংকট তৈরি হচ্ছে। এ সংকট কীভাবে নিরসন হবে?

সরদার সাহাদাত আলী: বর্তমানে আমাদের রেলওয়েতে যে লোকোমোটিভ ব্যবহৃত হচ্ছে তার মধ্যে ব্রডগেজের যেগুলো লোকোমোটিভ আছে সেগুলো চাহিদার মোটামুটি কাছাকাছি। ব্রডগেজ লাইনে ইঞ্জিনের সংকট এই মুহূর্তে নেই। আরও ৪৬টি লোকোমোটিভ আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

মিটার গেজের জন্য ৫০টি লোকোমোটিভ আসবে। এছাড়া চট্টগ্রাম-দোহাজারী প্রজেক্টের মধ্যে আরও ৩০টি লোকোমোটিভ আনার বিষয়টি সংযুক্ত। আমরা কিছুটা মিটার গেজ লোকোমোটিভের সংকটে আছি। ২০৩০ সাল পর্যন্ত মিটার গেজের জন্য লোকোমোটিভ সংগ্রহ করবো। ২০৩০ সালের পরে এই ইঞ্জিন আর সংগ্রহ করা হবে না। ২০৫০ সালের মধ্যে মিটার গেজ অবলুপ্ত করে সম্পূর্ণটাই ব্রডগেজে রূপান্তর করা হবে।

জাগো নিউজ: মিটার গেজের লোকোমোটিভ সংকট কবে নাগাদ কাটবে?

সরদার সাহাদাত আলী: এটি মেরামতের জন্য কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ ওয়ার্কশপে নিতে হয়। এগুলো আবার যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে পার করতে হয়, সেক্ষেত্রে কিছু জটিলতা থাকে। ওয়ার্কশপেও লোকবলের সংকট আছে। নতুন কিছু লোকোমোটিভ না আসা পর্যন্ত মিটার গেজের এ সংকট কাটবে না। আমরা চিন্তা করছি ২০৩০ সালের মধ্যে মিটার গেজের সব সংকটই কেটে যাবে।

জাগো নিউজ: সম্প্রতি রেলের জন্য ৩০০০ সিরিজের ইঞ্জিন কেনা হয়েছে। ধুলাবালিতে এ ইঞ্জিনের কম্প্রেশন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপযুক্ত সমীক্ষা যাচাই ছাড়াই কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে কী বলবেন?

সরদার সাহাদাত আলী: তিন হাজার সিরিজে যে লোকোমোটিভ আনা হয়েছে কিছু কিছু সমস্যা আমাদের নজরেও এসেছে। সার্ভিস ইঞ্জিনিয়াররা আছে তাদের জানানো হলে যে যে জায়গায় সমস্যা আছে সেই সমস্যাগুলো মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। যে ওয়ারেন্টি পিরিয়ড আছে এ সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা গেলে ঠিক করে নেওয়া যাবে।

এনএস/এএসএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।