বিআরটিএকে এনায়েত উল্যাহ

ফিটনেসবিহীন বাস জব্দ না করে ধ্বংস করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ পিএম, ১৫ মে ২০২৪

ঢাকা শহরে ফিটনেসবিহীন বাস জব্দ না করে ধ্বংস বা স্ক্র্যাপ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। বুধবার (১৫ মে) দুপুরে ঢাকার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে এক সভায় এ দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৭-এর অধীনে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এ সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) শেখ ফজলে নূর তাপস, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যক্রম তুলে ধরে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আমরা আজ স্পষ্ট করে বলতে চাই ফিটনেসবিহীন বা মেয়াদোত্তীর্ণ বাস স্ক্র্যাপ করা হোক। আমি বারবার বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে বলেছি আপনারা দু-চার-দশটা বাস আগে স্ক্র্যাপ করেন, এটা দেখুক সারাদেশ। তাহলে বাকিরা ভয়ে ভাইগা যাবে।’

ঢাকা শহরে বাসমালিকদের ৬০ শতাংশ গ্যারেজের মালিক উল্লেখ করে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আমি ঢাকা শহরের লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি নিয়ে ২১টা মিটিং করেছি। রাস্তায় দাঁড়াইছি, এ শহরের মালিকের মধ্যে ৬০ শতাংশ গ্যারেজের মালিক, ড্রাইভার। তারা এখন মালিক হয়েছে। বিভিন্ন গাড়ি যারা বিক্রি করে তারা এক লাখ টাকায় গাড়ির চেসিজ দিয়া দিছে। বিনা পয়সা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে গাড়ির জেসি দিছে, তুমি চালাইয়া পয়সা দাও। তখন তারা একটা বডি কিনে গাড়ির মালিক হয়ে গেছে। এসব জায়গা নিয়ন্ত্রণে আনা অনেক কষ্টকর।’

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, ‘আমি যখনই প্রেশার দেই তখন দুই ডিব্বা রং কিনে পাঁচ-সাতশো টাকা দিয়ে রং মাইরা দেয়; সেই ভাঙাচোরা টিনের ওপর। আমি বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে বলেছি, কয়েকটা ধইরা রাস্তার ওপর কাইটা ফেলেন, দেখুক সবাই।’

খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘ঢাকা শহরে নাকি ১৪ হাজার বাস। এখানে অভিযোগগুলো ম্যাক্সিমাম আসছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমরা যারা বাসমালিক শ্রমিক নেতা। এর জন্য দায়ী কি শুধু মালিক-শ্রমিক নেতা? এটার জন্য দায়ী কি আর কেউ নয়। বাংলাদেশের এমন কোনো সংগঠন আছে যে অর্ডার দিলেই হয়ে যায়। কারা আছে একটু শুনতে চাই।

বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রণালয়, কোনো সংস্থা আছে যে একটা নির্দেশ দিলে সে নির্দেশ সবাই মানে। আমি তো দেখি না সুতরাং এটা কীভাবে ভাবা যায় যে মালিক সমিতি অর্ডার দিলে সবাই মানবে। শ্রমিক অফিসে অর্ডার দিলে সব মানবে। তাইলে যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যাদের ওপর দায়িত্ব, আমি মনে করি তাদেরও এই দায়িত্ব নিতে হবে।’

অনেকেই বলছে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে মালিকরা সহযোগিতা করছে না, এমন অভিযোগ মিথ্যা জানিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সহযোগিতা দিতে চাচ্ছি না কোথায়? দোষারোপ করে দায়িত্ব এড়ালে তো হবে না। আজও বলতে চাই ঢাকা শহরে ফিটনেসবিহীন গাড়ি যদি থাকে এগুলোকে স্ক্র্যাপ করে ফেলুন। নট অনলি মেয়াদোত্তীর্ণ, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি ঢাকা শহরে নাই, স্টাফ বাস শুধু মেয়াদোত্তীর্ণ আছে।

রাতদিনে আমরা এসব নিয়ে ঘাঁটি আমরা বলতে পারি। স্টাফ বাস চলে কয়েক হাজার এসবের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ আছে। তারপরও যদি আমাদের মধ্যে থেকে থাকে আপনারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন আমরা সহযোগিতা দেবো। আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকবো। মালিক শ্রমিক নেতারা সঙ্গে থাকবেন। এই কথাটা চিন্তা করা ভুল যে মালিক-শ্রমিক কমিটি সহযোগিতা দিচ্ছে না। একশবার সহযোগিতা দিতে চাই। আমরা চাই না এ ধরনের বাস রাস্তায় চলুক। আমারও বাচ্চাকাচ্চা আছে। আমি এই দেশের নাগরিক। সুতরাং আমি চাইবো না এই গাড়িতে চড়ে মানুষ মারা যাক।

এমএমএ/বিএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।