এনআইডি-জন্মসনদ বাণিজ্য, ইসির কর্মচারীসহ গ্রেফতার ২
জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন সনদ কিংবা কোভিড-১৯ টিকার সনদ দরকার। চাহিদা মতো টাকা দিলেই নিজের তৈরি ওয়েবসাইট থেকে এসব সনদ বানিয়ে সরবরাহ করতেন লিটন মোল্লা নামে এক প্রতারক। আর তাকে এনআইডি সার্ভার থেকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতেন খোদ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জামাল উদ্দিন।
দেখতে হুবহু একই রকম হলেও নকল ওয়েবসাইট থেকে বানানো এসব নকল সনদ বাণিজ্যে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন লিটন। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করে চাহিদা মতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আদায় করা হয় এসব টাকা।
দীর্ঘদিন গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে অবস্থান শনাক্ত করে অবশেষে তাদের গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
আরও পড়ুন
তাদের মধ্যে লিটন মোল্লাকে বাগেরহাট থেকে ও জামাল উদ্দিনকে পাবনা থেকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগের পৃথক দুটি টিম।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নজরদারি করতে গিয়ে এ চক্রের সন্ধান পায় সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগ। দীর্ঘদিন তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার জামাল নির্বাচন কমিশনের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। তার সহায়তায় লিটন ইসির সার্ভার থেকে এনআইডি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতেন।
তারা অর্থের বিনিময়ে জাল এনআইডি প্রদান, হারানো এনআইডির কপি তৈরি, এনআইডির তথ্য সংশোধন, জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ও নাম সংশোধন, কোভিড-১৯ এর টিকা সনদ ও টিন (TIN) সার্টিফিকেটের কপি তৈরি করে সরবরাহ করতেন।
সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, গ্রেফতাররা কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী তিন হাজার টাকা পর্যন্ত নিতো। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা গ্রাহক সংগ্রহ করতো। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী লিটন নিজের তৈরি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এসব জাল সনদ তৈরি করে গ্রাহকদের দিতো এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো। এভাবে তারা প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসিপ্রধান বলেন, এ প্রতারক চক্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্তরত কিছু অসাধু কর্মচারী জড়িত আছে। চক্রে আর কারা জড়িত তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
টিটি/এমকেআর/জিকেএস