কামরাঙ্গীরচর থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না: মেয়র তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ পিএম, ০৫ মে ২০২৪

কামরাঙ্গীরচরে বসবাসরত কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। এসময় তিনি সেখানে বসবাসরত সবাইকে অমূলক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতেও অনুরোধ করেছেন।

রোববার (৫ মে) বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে কামরাঙ্গীরচরকে নান্দনিক, বাসযোগ্য ও বুদ্ধিদীপ্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে উন্নয়ন পরিকল্পনা শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় মেয়র তাপস এসব কথা বলেন।

তাপস বলেন, আপনাদের মধ্যে একটি শঙ্কা আছে যে, কামরাঙ্গীরচরের যে উন্নয়ন পরিকল্পনা করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য আপনাদের উচ্ছেদ করা হবে। আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি, সেখান থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না। এ উন্নয়ন পরিকল্পনা আপনাদের জন্য। সেখানে আপনারা থাকবেন, আপনাদের পরিবার থাকবে, আপনাদের বংশধরেরা থাকবে। কিন্তু আপনারা অমূলক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।

কামরাঙ্গীরচরকেন্দ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে তাপস বলেন, আমরা পোস্তগোলা থেকে রায়ের বাজার পর্যন্ত ৮ সারির ইনার সার্কুলার রোড করছি। কামরাঙ্গীরচরবাসী সেই সড়কের সুফল ভোগ করবে। এছাড়া কামরাঙ্গীরচরের ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে ঝাউচর সড়ক ৬ সারিতে উন্নীত করার জন্য কাউকে উচ্ছেদের প্রয়োজনই হবে না। দ্বিতীয়ত ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে নদীর পাড় ঘেঁষে ৪ সারির যে সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে সেখানে ব্যক্তি মালিকানাধীন কারো কোনো এক ইঞ্চি জমিও পড়ছে না। তৃতীয়ত ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ সারির সড়ক প্রশস্ত করার জন্য মাত্র ৩ দশমিক ৪ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। বাকি পুরোটাই সরকারি জমি। সেই ৩ দশমিক ৪ একর জমিতে যাদের বাড়ি পড়বে আমরা তাদের সরকারি নিয়মে ক্ষতিপূরণ তো দেবোই।

কেন কামরাঙ্গীরচরে উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তার যথার্থতা তুলে ধরে তাপস বলেন, একটি বিষয় আপনারা নিশ্চয় অনুধাবন করবেন, আজ নতুন প্রজন্মের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পুরান ঢাকায় থাকেন না। তারা হয় নতুন ঢাকা নয়তো উত্তরার মতো জায়গায় বসবাস করেন। এর মূল কারণ হলো, পুরান ঢাকা বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। কামরাঙ্গীরচরের যে অবস্থা তাতে সেখানে বাসযোগ্যতা হলো তিন লাখ মানুষের। কিন্তু আপনাদের কথামতো সেখানে বসবাস করে ২০ লাখ মানুষ। সুতরাং এখনই যদি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে কামরাঙ্গীরচরও অচিরেই বাসযোগ্যতা হারাবে। সেজন্যই আমাদের এই উন্নয়ন পরিকল্পনা। তবে আমি আপনাদের আবারও আশ্বস্ত করছি, সেখান থেকে কাউকে অন্যায়ভাবে, অবৈধভাবে উচ্ছেদ করা হবে না।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, তিনি আমাদের যে উন্নয়ন পরিকল্পনা দেখিয়েছেন তাতে আমাদের মধ্যে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, ভয়-ভীতি ছিল তা অনেকাংশেই কমে এসেছে। এ উন্নয়ন পরিকল্পনায় তিনটা সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে। সুতরাং আমরা তাপসের বক্তব্যে আশ্বস্ত হয়েছি। তারপরও আমি বলবো, আমার নামে যে ১০৪ ফুটের সড়ক প্রশস্ত করা হবে তাতে ৩.৪ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। সেসব জমির মালিকদের সরকারি নিয়মানুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি তাদের কামরাঙ্গীরচরের অন্য সরকারি জমিতে পুনর্বাসন করা যায় কি না সেটা আপনি বিবেচনা করবেন। আমি আশাবাদী আপনি সহযোগিতা করবেন।

অনুষ্ঠানে কামরাঙ্গীরচরবাসীর পক্ষে মেয়রের কাছে লিখিত স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামানসহ করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ঢাদসিকর ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এমএমএ/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।