মেটাল কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৩ পিএম, ০২ মে ২০২৪

মেটাল কয়েনে মাত্র ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে দু’দিনের ব্যবধানে পাওয়া যাবে শত কোটি টাকা। এমন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ধাপে ধাপে ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। শুধু রফিকুল ইসলাম নয়, তার মতো আরও অনেকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি। চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরাো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সম্প্রতি চাঁদপুর ও ফেনী থেকে এ প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- কাজী মো. ইউছুফ (৪৬) ও মো. মানিক মোল্লা (৬৬)।

বৃহস্পতিবার (২ মে) পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মো. রফিকুল ইসলাম নামের একব্যক্তির সঙ্গে ২০১৫ সালে পূর্বপরিচিত গ্রেফতার মো. ইউসুফের মাধ্যমে পরিচয় হয় আরেক অভিযুক্ত মানিক মোল্লার।

পরিচয়ের সূত্র ধরে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মানিক মোল্লাসহ চক্রটি।

তিনি বলেন, প্রথমে চক্রটি মানুষের সঙ্গে সখ্য ও বিশ্বাস স্থাপন করে। এরপর তাদের মেটাল কয়েনে বিনিয়োগ করার কথা বলে। এভাবেই ভুক্তভোগী রফিকুলকে চাঁদপুরের বাসায় নিয়ে যায় আসামি মানিক মোল্লা। সেখানে মেটাল কয়েনকে বৈদ্যুতিক আলোর স্পর্শে এনে বিভিন্ন রিফ্লেকশনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখান। আর এতেই অনেকটা লোভে পড়ে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন রফিকুল ইসলাম।

মেটাল কয়েন প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আরও বলেন, চুক্তি অনুযায়ী রফিকুল ইসলাম ধাপে ধাপে মোট ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা তুলে দেন চক্রের সদস্যদের হাতে। একই সঙ্গে চুক্তির কথা কেউ যেন জানতে না পারে সে শর্তে শাহজালাল ও শাহপরানের নামে শপথ পড়ানো হয় তাকে।

পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, বাস্তবে এমন কোনো কয়েনের অস্তিত্ব কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকটা ‘তক্ষক’, ‘সীমান্ত পিলার’-এর মতো এটাও একটি প্রতারণার কৌশলমাত্র।

তিনি জানান, চাঁদপুর থেকে ফেরার পথে সদরঘাটে এসে চক্রের অন্য সদস্যরা সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশের ছদ্মবেশে আসামি ইউসুফ এবং মেটাল কয়েনটি তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। এ সময় রফিকুল ইসলামসহ অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদের একটি নাটক সাজিয়ে শেষে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে চক্রের আরেক সদস্য সাখাওয়াত এসে কয়েনটি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিতে রফিকুলের কাছে থেকে আরও ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা এবং আরেক সদস্য লিটন ৮০ লাখ টাকা নিলে তখন রফিকুল ইসলামের সন্দেহ হয়।

এরপর গত ২৫ মার্চ তিনি এ বিষয়ে রাজধানীর উত্তরার এয়ারপোর্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ মামলার সূত্র ধরে পিবিআই অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে।

চক্রের অন্য সদস্যরা এখনো পলাতক। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম।

টিটি/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।