মে আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধা বঙ্গবন্ধু পরিষদের

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৮ পিএম, ০১ মে ২০২৪

মহান মে দিবসে মে আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। বুধবার (১ মে) এক বিবৃতিতে এ শ্রদ্ধা জানান তারা।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমরা পৃথিবীর সব মেহনতী মানুষকে অভিনন্দন ও তাদের সঙ্গে সংহতি জানাই। আগে শ্রমজীবী মানুষকে যেখানে প্রতিদিনই কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হতো, কাজের অনুপাতে পারিশ্রমিক ছিল যেখানে অত্যন্ত নগণ্য, সে অবস্থায় সন্তানসহ মানবেতর জীবনযাপন ছাড়া তাদের আর কোনো গত্যন্তর ছিল না।’

তারা বলেন, ‘১৮৮৪ সালে শ্রমজীবী মানুষেরা যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে বিরাট সমাবেশ করে মালিকপক্ষকে কাজের সময় কমিয়ে দৈনিক ৮ ঘণ্টা করা ও সাপ্তাহিক একদিন ছুটি দেওয়ার দাবি করে। কিন্তু মালিক বা সরকার কেউ এ দাবি মেনে নেয়নি। শ্রমজীবীরাও মরণপণ আন্দোলন শুরু করেন। ১৮৮৬ সালের মে মাসে শিকাগোর হে মার্কেট এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের সমাবেশে পুলিশ গুলি করে। পরপর কয়েকদিন ধরে শ্রমিকদের মিছিলে পুলিশ বারবার গুলিবর্ষণ করে। আন্দোলন করার ‘অপরাধে’ ছয় শ্রমিক নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। কয়েকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে বয়। দুঃখে-অপমানে-অত্যাচারে একজন নেতা জেলের ভেতর আত্মহত্যা করেন। এভাবে অত্যন্ত নৃশংসভাবে শ্রমজীবীদের এই আন্দোলনকে দমন করা হয়।’

তারা আরও বলেন, কিন্তু এই যৌক্তিক মানবিক আন্দোলন কালক্রমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং এই দাবি বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের দাবিতে কমন দাবিতে পরিণত হয়। ১৮৮৯ সালে প্যারিসে ফরাসি বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তি উৎসবে শ্রমজীবী মানুষ শিকাগোর শ্রমিকদের আত্মত্যাগের স্মৃতিতে বিশ্ববাসীর কাছে ১৮৯০ সালের ১ মে থেকে এই দিনটিকে ‘মে ডে’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করার প্রস্তাব করে। ১৮৯১ সালে এই প্রস্তাবটি আন্তর্জাতিক রূপ পায় এবং এরপর থেকে দিনটি সারাবিশ্বের মেহনতী মানুষের কাছে সংগ্রামের, কৃতজ্ঞতার ও শ্রদ্ধার একটি পবিত্র দিন হিসেবে পালিত হতে থাকে।’

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলেন, শিকাগো ও পরবর্তীকালের সেই আন্দোলনের কারণেই আজ আমরা অশিক্ষিত ও শিক্ষিত শ্রমিক (যাদের বলে ‘ব্লু কলার’ ও ‘হোয়াইট কলার’ ওয়ার্কার) নির্বিশেষে সবাই দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ও একদিন সাপ্তাহিক ছুটির অধিকার পেয়েছি, মেহনতী মানুষকে ‘মানুষ’ বলে গণ্য করার ‘নিয়ম’ পেয়েছি।’

তারা বলেন, ১৯২৩ সাল থেকে ভারতবর্ষে এই দিনটি পালিত হয়। বাংলাদেশেও এই দিনটি দেশটির জন্মলগ্ন থেকেই রাষ্ট্রীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শুধু তাই নয়, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পৃথিবীর সব শোষিত মানুষের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণের কারণে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালেই জাতিসঙ্ঘের অঙ্গসংঠন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা আইএলওর সদস্যপদ লাভ করে। বঙ্গবন্ধু সরকার শ্রমজীবীদের স্বার্থরক্ষায় এই সংস্থার ছয়টি ভিত্তি নীতিমালার এবং ২৯টি সনদের সবগুলোতে স্বাক্ষর করে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ দেশ শ্রমজীবীদের অধিকারবিষয়ক এই সনদগুলোতে স্বাক্ষর করেছে।’

বিএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।