পেশা পরিবর্তন করে শরবত বিক্রিতে ঝুঁকছেন অনেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৮ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

তীব্র গরমে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে জনজীবন। গরম আর রোদে অতিষ্ট সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র এ গরমে পরিশ্রমের পর ঠান্ডা শরবতে গলা ভিজিয়ে প্রশান্তির ঢেকুর তুলছেন অনেকে। তাই গরমে রাজধানীতে বেড়েছে শরবতের চাহিদা। রাস্তার পাশে ভ্যান-ঠেলাগাড়িতে এসব শরবত বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় পেশা পরিবর্তন করে অনেকেই ঝুঁকেছেন এ শরবত বিক্রিতে।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, আজিমপুর মোড়, বুয়েট ক্যাম্পাস, বকশিবাজার মোড় এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে কিছু দূরত্বেই মিলছে শরবতের দোকান। এসব দোকানে সাধারণত লেবুর শরবত বিক্রি হচ্ছে যার প্রতি গ্লাসের মূল্য ১০ টাকা। এছাড়া এ লেবু-পানির সঙ্গে শরবতের পাউডার মিশিয়ে তৈরি বিশেষ শরবত ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূলত শ্রমজীবী মানুষ আর পথচারীরা এ শরবতের ক্রেতা। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরম বাড়ায় শরবতের বিক্রিও বেশ বেড়েছে।

পেশা পরিবর্তন করে শরবত বিক্রিতে ঝুঁকছেন অনেকে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শরবত বিক্রি করা জাহিদুল বলেন, লেবুর শরবত বেশি বিক্রি করি। লেবুর রসের সঙ্গে চিনি আর বিটলবন মিশিয়ে শরবত বানাই। এ শরবতের সঙ্গে ট্যাং পাওডার দিলে ১৫ টাকায় বিক্রি করি। প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার শরবত বিক্রি হয়। আগে কাঁচামালের ব্যবসা করতাম এখন শরবত বিক্রি করি। যতদিন গরম থাকে ততদিন বিক্রি করবো। পরে অন্য ব্যবসায় যাবো।

পেশা পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন যেটার চাহিদা সেই ব্যবসা করি। এখন শরবতের চাহিদা আছে তাই এটা নিয়েই আছি।

রাজধানীর নিউ মার্কেটের শরবত বিক্রেতা আজমল বলেন, প্রতিদিন দুই হাজার-পঁচিশশো টাকার মতো শরবত বিক্রি হয়। কয়েক দিন গরম বেশি পড়ছে তাই বিক্রিও বেশি। শরবতে বরফ দিয়ে দেই। গরমে সবাই চায় একটু ঠান্ডা পানি খেতে।

পেশা পরিবর্তন করে শরবত বিক্রিতে ঝুঁকছেন অনেকে

শরবত বিক্রির আগের পেশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় এক সময় একেক কাজ করি। কিছু দিন আগে দুধ বিক্রি করেছি। আবার বাড়ি থেকে আসছি অনেক দিন। এখন গরমে ঢাকায় এসে শরবত বিক্রি করি। এসব বিক্রি করা কঠিন কোনো কাজ না। অল্প পুঁজির ব্যবসা, লাভও ভালো।

রাজধানীর পলাশী মোড় এলাকায় শরবত বিক্রেতা জামাল বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকে এক গ্লাস শরবত খান। রিকশা চালকরাও খান। দাম কম, মাত্র ১০ টাকায় বিক্রি করি। সকাল ১০টায় দোকান বসাই সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকি। হাজার দুয়েক টাকার মতো বিক্রি হয়।

রাস্তার পাশে থাকা ভ্রাম্যমাণ এমন বেশ কয়েকজন শরবত বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা একসময় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। গরমে শরবতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তবে রাস্তার পাশে থাকা এসব শরবতের দোকানে তেমন একটা ভিড় দেখা যায়নি। দুই-একজন করে ক্রেতা আসছেন শরবত পান করে চলে যাচ্ছেন। উল্টো চিত্র দেখা গেছে আজিমপুর মোড়ে থাকা ঢাকেশ্বরী জুস কর্নারে। এখানকার জুসের দাম বেশি হলেও জুস কিনতে রীতিমতো সিরিয়ালে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। দোকানে থাকা জুসের দামও বেশি।

দোকানে জুস খেতে আসা আবদুল্লাহ মাসুম বলেন, গরমে জুস খেলে একটু এনার্জি পাওয়া যায়। এখানে অনেক ধরনের জুস আছে, তাই পছন্দ মতো অর্ডার করে জুস নেওয়া হচ্ছে। দুপুরে খাবারের পর জুস একটু শরীরে বাড়তি সতেজতা দেয়।

এনএস/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।