তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় ২ জন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১০ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২৪

নৌকায় করে ইতালিতে মানবপাচারের সময় তিউনিসিয়া উপকূলে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় চক্রের মূলহোতা ও চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক দুই আসামিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১ ও র‍্যাব-৬। আসামিরা হলেন-যুবরাজ কাজী (২৪) ও কামাল (৩৮)। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি ভিসা কার্ড এবং নগদ ৭ হাজার ১৬৪ টাকা জব্দ করা হয়।

সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে র‍্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার সহকারী পরিচালক (অপস্ এবং মিডিয়া অফিসার) মো. মাহফুজুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, প্রবাসে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপট পুঁজি করে এক শ্রেণির সংঘবদ্ধ চক্র বিদেশে কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়ে নিরীহ মানুষদের প্রতারিত করছে। ইতালিতে মানবপাচারের ঘটনায় মামলার বাদী সুনিল বৈরাগীর ছেলে ভুক্তভোগী সজল বৈরাগীকে বিদেশে যাওয়ার জন্য পূর্ব পরিচিত আসামি যুবরাজ কাজী প্রস্তাব দেন। যুবরাজ কাজীর বাবা মো. মোশারফ কাজীর মাধ্যমে বৈধপথে ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করবে, বিনিময়ে ১৪ লাখ টাকা দিতে হবে। মোশারফ কাজী বর্তমানের লিবিয়া অবস্থানরত। এ প্রস্তাবে ভুক্তভোগী সজল বৈরাগী রাজি হয়ে গত বছরের ১৭ নভেম্বর গোপালগঞ্জে নিজ বাসায় যুবরাজ কাজীর হাতে নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও পাসপোর্ট দেন।

পাসপোর্ট ও টাকা দেওয়ার কিছুদিন পর যুবরাজ কাজী ভুক্তভোগীর সব কাগজপত্র তৈরি বলে এবং ভুক্তভোগীর বাকি টাকা রেডি করতে বলে। এরপর যুবরাজ কাজী গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ইতালি যাওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী সজল বৈরাগীকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে আসে। বিমানবন্দরের প্রধান গেটে প্রবেশের পূর্বেই গাড়ি থেকে নামার আগে ভুক্তভোগী সজল বৈরাগীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নেয় এবং বিমানবন্দরে রাতে অবস্থান করে ৩১ ডিসেম্বর ভোর ৬টার দিকে আকাশ পথে ইতালির উদ্দেশ্যে দুবাই রওনা করে।

পরবর্তীতে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি যুবরাজ কাজীর গোপালগঞ্জের নিজ বাসায় তার হাতে আরও নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা গ্রহণ করে।

এএসপি মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, পরবর্তীতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের পরিবার জানতে পারে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ভূমধ্যসাগরে ইতালির উদ্দেশ্যে গমনকারী একটি ডিঙ্গি নৌকা তিউনিশিয়া উপকূলে ডুবে যায় এবং অনেক প্রাণহানি ঘটে। তার মধ্যে সজল বৈরাগীসহ বাংলাদেশি ৮ নাগরিকের মৃত্যু হয়।

পরে মৃত সজলের বাবা বাদী হয়ে ডিএমপি বিমানবন্দর থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা রুজুর পর র‍্যাব-১ এর কাছে একটি অভিযোগ করেন। এর ফলে র‍্যাব-১ আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২১ এপ্রিল রাতে র‍্যাব-১ ও র‍্যাব-৬ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানাধীন রাঘদী ইউনিয়ন এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় যুবরাজ কাজী ও কামালকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‍্যাবের এ কর্মকর্তা।

টিটি/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।