নাগরিকের তথ্যভাণ্ডার বেসরকারি খাতে তুলে দেওয়া সংবিধান পরিপন্থি
বেসরকারি খাতে নাগরিকের তথ্যভাণ্ডার তুলে দেওয়া সংবিধান পরিপন্থি। সংবিধানে যেখানে নাগরিকের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, সেখানে তথ্য সুরক্ষার বদলে বেসরকারি খাতে তুলে দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। যারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন তাদের আগামীতে বিচারের আওতায় আনা হবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সংলগ্ন একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। নাগরিকদের তথ্য বেসরকারি খাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। নাগরিকদের তথ্যের নিরাপত্তা সংবিধানে বলা হয়েছে। যেখানে নাগরিকদের তথ্য তুলে দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। যারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন তাদের আগামীতে বিচারের আওতায় আনা হবে।
এসময় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর জোহা বলেন, এর মাধ্যমে নাগরিকদের অর্থের নিরাপত্তার সঙ্গে সঙ্গে ভূমি এবং তার সম্পদের নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশ্বের কোনো দেশেই নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বেসরকারি খাতে দেওয়ার নজির নেই।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইসরাত হাসান বলেন, গত ২০ মার্চ হাইকোর্ট থেকে এ ব্যাপারে একটি রোল নিশি জারি করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে বেসরকারি খাতে নাগরিকের তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা কেন অবৈধ হবে না? আদালত এবং সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য বেসরকারি হাতে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
মূলপ্রবন্ধে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে সরকারের নেওয়া শপথ অনুযায়ী সংবিধান রক্ষা করা তথা নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ও নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক। গত বছর থেকে আমরা লক্ষ্য করছি, সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে জন্ম নিবন্ধনকারীসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান নাগরিকের তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে লক্ষ্য করি পাঁচ কোটি নাগরিকের তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছে। যেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নাগরিকদের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। সেখানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে এ দায়িত্ব দেওয়া হলে সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে বলে আমরা মনে করছি।
আরএএস/এমএএইচ/এএসএম