‘গরমে এমন ক্লান্ত আর কখনো হইনি’
‘সূর্যের তাপ ও গরমের যে অবস্থা টানা ১০ মিনিট রিকশা চালাতে পারি না। কিছুক্ষণ পরপর ওরস্যালাইন মেশানো পানি খাই। পানি না খেলে কলিজা শুকিয়ে যায়। রিকশার পেডেল ঘুরে না। আল্লাহ জানে আর কত দিন এমন অবস্থা থাকে।’
শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সামনে চলন্ত অবস্থায় জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন রিকশাচালক রিপন মিয়া (৪০)। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। আলাপকালে রিপন বলেন, চার বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালাই। গরমে এমন ক্লান্তি আর কখনো হইনি। রিকশায় উঠে যাত্রীরাও হাঁসফাঁস করে।
কয়েক দিন ধরে এমন প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এর মধ্যে শনিবার (২০ এপ্রিল) দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে দেশব্যাপী গরমের ভোগান্তি আরও বাড়বে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার সকাল থেকে ঢাকার আকাশ মেঘমুক্ত। উত্তাপ এতটাই যে রোদে শরীর ছোঁয়ানো যাচ্ছে না। প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হচ্ছে, তাদের এ উত্তাপে পড়তে হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। এছাড়া শহরের ভাসমান মানুষকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
বঙ্গবাজার সংলগ্ন এনেক্সকো কমপ্লেক্স। এ কমপ্লেক্সের ভেতর থেকে ভ্যানে মালামাল তুলছিলেন চালক জাকির হোসেন। এতে ঘামে তার গায়ে থাকা শার্ট ভিজে গেছে। আলাপকালে জাকির বলেন, কাজ না করলে পেটে ভাত জুটে না। গরিবের গরম বা শীত সব সময়ই কাজ করতে হয়। তবে এবার সড়কে ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। গরমে রাতেও বাসায় ঘুমাতে পারি না।
মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে পার্কিং করা বাসের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন এনা পরিবহনের চালকের সহকারী সাইফুল রনি। তিনি বলেন, রোদের তাপে বাসের ভেতরটা আগুনের ফুলকির মতো হয়ে আছে। ভেতরে বসা যায় না। তাই বাসের ছায়ায় বসে আছি। কিন্তু সড়কের উত্তপ্ত তাপ গায়ে লাগছে। গরম থেকে মুক্তি মিলছে না।
এমএমএ/এমআইএইচএস/এএসএম