৩০০ টাকার ভাড়া ৭০০
ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের ‘পকেট কাটছেন’ অটোরিকশাচালকরা
ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে গাবতলীতে। তারা বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হন্যে হয়ে খুঁজছেন যানবাহন। তীব্র গরমে যানবাহন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া চাচ্ছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকরা। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে তাদের।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনালে এমন চিত্র দেখা গেলো। টার্মিনালটির উল্টো পাশের সড়কে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাস। এরপর ব্যাগ ও লাগেজ নামিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা খুঁজতে দেখা যায় যাত্রীদের। বেশিরভাগ যাত্রীর কাছেই একাধিক ব্যাগ। এ সুযোগে ভাড়া বাড়িয়ে বলতে দেখা যায় অটোরিকশাচালকদের।
কলেজছাত্র রাতুল ইয়ামিন যাবেন উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে। গাবতলী টার্মনাল থেকে তিনি ৩০০ টাকাূ একটি অটোরিকশা ঠিক করেছেন। এর আগে কয়েকজন অটোরিকশাচালকের সঙ্গে দামাদামি করেন। রাতুল বলেন, ৩-৪টা দেখলাম, তারা ৬০০ টাকা, ৭০০ টাকা, ৭৫০ টাকা চাইছে। অথচ ৩০০ টাকায় অটোরিকশা পেলাম। এটাই স্বাভাবিক ভাড়া।
অটোরিকশাচালক বলেন, যারা গন্তব্য চেনে না তারাই বেশি ভাড়া বলছেন।
আরও পড়ুন
টার্মিনালের বিপরীতে এ মজিদ খান টাওয়ারের সামনে সাদ্দাম হোসেন নামে এক যাত্রীকে ভাড়া নিয়ে দামাদামি করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আমি যাবো টঙ্গী কলেজগেট। ভাড়া চাইছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। ১৭ কিলোমিটার রাস্তা, আমি ৫০০ টাকা বলেছি। কয়েকটা অটোরিকশা দেখেছি। কেউ যেতে চাইছে না। আব্বা-আম্মাকে নিয়ে বিপদে পড়েছি।
একই জায়গা থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের ভাড়া ৭০০ টাকা চান একজন অটোরিকশাচালক। জবাবে রাজবাড়ী থেকে আসা যাত্রী মিল্লাত হাসান তাকে ৫০০ টাকা বলেন। কিন্তু ৬৫০ টাকায়ও যেতে রাজি নন অটোরিকশাচালক।
মিল্লাত হাসান বলেন, এত গরমে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য কেউ দামাদামি করছে না। অটোরিকশাচালকদের কথামতো ভাড়া দিয়ে দিচ্ছে। আরেক যাত্রী জানান, চালকরা দ্বিগুণ ভাড়া চাইছেন। সিএমএইচের ভাড়া চাইছে ৫০০ টাকা। যাত্রীরাও নিরুপায় হয়ে ওঠে যাচ্ছে।
তবে অটোরিকশাচালকরা বলছেন, তারা ন্যায্য ভাড়া দাবি করছেন। শাহিন নামে এক চালক বলেন, আজ যাত্রী বেশি, অটোরিকশা কম। এজন্য অনেকেই ভাড়া বেশি চাইতে পারে। তবে বেশি ভাড়া দেওয়া পাবলিক এখানে নেই। ৩০০ টাকার ভাড়া ১৮০ টাকা বলছে যাত্রীরা, এজন্য খ্যাপ ছেড়ে দিচ্ছি।
আরেক চালক বলেন, যাত্রীরা বলে এক জায়গায় যাবে কিন্তু নামে অন্য জায়গায়। দূরে নামে, তার ওপর একেকজনের ৫-৬টা ব্যাগ ওঠানামা করতে হয়। চালকরা সামান্য বেশি ভাড়া চাইতে পারে। তবে কেউ বেশি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছে না।
এদিকে আজ গাবতলীতে ফিরে আসা যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পর পর বিভিন্ন গন্তব্যের বাস যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে। যানজটের কারণে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি বাস দেরি করে ফিরেছে। যাত্রীদের অনেকেই জানিয়েছেন, ঈদে আগের মতোই বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন তারা।
এসএম/এসআইটি/জিকেএস