সায়েদাবাদে ঘরমুখো যাত্রীর চাপ কম, হতাশ পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:২৭ পিএম, ০৮ এপ্রিল ২০২৪

আর দুদিন পরেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। দূর-দূরান্তে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়বেন অনেক মানুষ। সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ঘরমুখো যাত্রীর সংখ্যা কম। এতে হতাশ পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আর দুদিন পরেই ঈদ, কিন্তু অন্যান্য ঈদে এ সময়ে যাত্রীর যে চাপ থাকে, তা থেকে এখন অনেক কম। তারা বলছেন, গাড়ি পূর্ণ হতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। এসময়ে এমন হওয়ার কথা না। বিগত ঈদগুলোতে তারা এমন পরিস্থিতি দেখেননি বলেও দাবি করেছেন।

সোমবার সকাল থেকে যাত্রাবাড়ীর জনপথ মোড়সহ সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু যাত্রী রয়েছে। পরিবারের সদস্য, ব্যাগ, জিনিসপত্র নিয়ে কেউ গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া গাড়ির কর্মীরা যাত্রীদের জন্য হাঁক-ডাক দিচ্ছেন। গাড়ি পূর্ণ হতে সময় লাগছে।

সায়েদাবাদে ঘরমুখো যাত্রীর চাপ কম, হতাশ পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা

যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, আগের চেয়ে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবহন মালিকরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, দু-একজন বেশি ভাড়া নেওয়ার চেষ্টা করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বরিশালের উদ্দেশ্যে বিএমএফ পরিবহনের একটি গাড়ি সায়েদাবাদ ছেড়ে যাচ্ছিল। বাসের যাত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, অন্য সময় বরিশালে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া থাকলেও এখন ৫৫০ টাকার নিচে যাওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন

চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা সিডিএম পরিবহনের বাসে জনপ্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। যাত্রীরা জানিয়েছেন, আগে এ ভাড়া ছিল ৪০০ টাকা।

কুমিল্লা রুটে চলাচল করা এশিয়া লাইন পরিবহনের চালক মো. মনির হোসেন বলেন, সকালে আইসা বইসা আছি। এখন সাড়ে ১০টা বাজে, গাড়ি ভরে নাই। ঈদের সময় হলেও যাত্রী খুবই কম। মানুষ বাড়ি যাইবো কেমনে, সব জিনিসের যে দাম। মানুষের পকেটে টাকা নাই।

নাঙ্গলকোট রুটে চলাচল করা জোনাকি পরিবহনের কর্মী মো. শাহজাদ বলেন, শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত চার দিনে আমার মিনিমাম খাওয়া খরচ বাদে ৪ হাজার টাকা থাকার কথা। সেখানে আমার ৫০০ টাকাও নাই। মানুষ এখন পর্যন্ত বাড়ি যাচ্ছে না। মনে হয়, এখনো বেতন পায় নাই।

সায়েদাবাদে ঘরমুখো যাত্রীর চাপ কম, হতাশ পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা

সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বেলা ১১টার দিকে জাগো নিউজকে বলেন, সায়েদাবাদে যাত্রী খুবই কম। ভোরবেলা সেহরির পরে কিছু যাত্রী হয়েছিল। এরপর যাত্রী নেই। অন্য ঈদগুলোতে এসময় এমন অবস্থা হয় না।

যাত্রী এত কম হওয়ার কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এবার ছুটি লম্বা। মানুষ হয়তো আস্তে ধীরে যাচ্ছে। অফিস আদালত-তো এখনো খোলা। আজ বিকেল বা কালকে থেকে যাত্রী হবে বলে আশা করছি।

ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে তিনি বলেন, ডেকে ডেকে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে সেখানে ভাড়া বাড়ে কীভাবে? যাত্রীর চাপ হলে সেখানে না হয় ভাড়া বাড়ার বিষয়টি আসে।

এ বাস মালিক আরও বলেন, আগে আপনি নোয়াখালীর গাড়িতে লাকসাম গেছেন ২০০ টাকায়। কিন্তু এখন লাকসাম গেলেও নোয়াখালীর ভাড়া ৪৭২ টাকা আপনাকে দিতে হচ্ছে। এরকম ক্ষেত্রে কিছু ঝামেলা হচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এগুলো নিয়ে আলোচনাও করেছি।

সকাল বেলা বরিশালে চলাচল করা গোল্ডেন লাইনের একটা গাড়িতে ভাড়া বেশি নেওয়ায় তাদের কাউন্টার আমরা বন্ধ করে দিয়েছি, বলেন আবুল কালাম।

আরএমএম/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।