কেরানীগঞ্জে বাণিজ্যিক নগরী গড়ে তোলা হবে: তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪৩ পিএম, ০২ এপ্রিল ২০২৪

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত কেরানীগঞ্জে নতুন বাণিজ্যিক নগরী গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

তিনি বলেন, পুরান ঢাকার চকবাজার ও মতিঝিলকে পুনরুজ্জীবিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

মেয়র বলেন, ঢাকার অপরিকল্পিত নগরায়নের জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। আমরাই এটা সৃষ্টি করেছি। নগরের অভিভাবক হিসেবে সিটি করপোরেশন নগরের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

তিনি বলেন, কোনো ধরনের কর বৃদ্ধি ছাড়াই সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে ২০২৩ সালে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ১০৩১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছিল। ২০২০ সালে যার পরিমাণ ছিল ৫১২ কোটি টাকা।

নগরের জলাবদ্ধতার বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে এবং সম্প্রতি বেশকিছু খাল দখলমুক্ত করা হয়েছে বলে জানান শেখ ফজলে নূর তাপস।

মেয়র বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত কেরানীগঞ্জে নতুন বাণিজ্যিক নগরী গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালকে আধুনিক সুবিধায় রুপান্তর করা হয়েছে। এর উদ্বোধনের পর আর কেউ টার্মিনালের বাইরে বাস কাউন্টার স্থাপন করতে পারবে না।

দোকানের সামনে হকারদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র।

তিনি বলেন, রাজধানীতে যানজট নিরসন ও ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের শনাক্তে ৬৪টি ইন্টারসেকশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আইওটি) প্রযুক্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকার ফুটপাত ও রাস্তা থেকে হকারদের উচ্ছেদ সহজ নয়। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আটটি স্থানকে হলুদ ও সবুজ জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যেখানে হকাররা তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে পারবেন। তবে সিটি করপোরেশনের চিহ্নিত লাল জোনে কেউ দোকান বসাতে পারবেন না।

ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, যানজটের কারণে পুরান ঢাকার অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে। দেশের জিডিপিতে পুরান ঢাকার অবদান প্রায় ২০ শতাংশ। অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, যানজট ও অপ্রতুল পরিসেবার জন্য এ এলাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় নানা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। রাজধানীর ঢাকার যানজটের কারণে দেশের সামগ্রিক জিডিপি প্রায় ২.৯ শতাংশ হ্রাস পায়।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ঢাকা শহরে ব্যবহার যোগ্য রাস্তার পরিমাণ মাত্র ৫ শতাংশ। ফলে আমাদের রাস্তার ওপর মানুষ ও পরিবহনের চাপ অত্যধিক।

তিনি বলেন, ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজার, ছোট কাটরা ও বড়কাটরা, পাটুয়াটুলিসহ অন্যান্য এলাকায় যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া উক্ত এলাকায় পাইকারি বাজারে পার্কিং সুবিধা না থাকার যানজট লেগে থাকে।

তিনি বলেন, গুলিস্তানের আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সরিয়ে নেওয়া গেলে যানজট আরও কমবে। সেই সঙ্গে হকারদের জন্য সুনির্দিষ্ট সময় দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে যানজট হ্রাস পাবে।

তিনি পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে স্কাইওয়াক স্থাপন ও স্মার্ট পার্কিং চালুর প্রস্তাব দেন। তিনি জানান, ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে ১৮টি স্টেকহোল্ডার রয়েছে। সবার মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানো গেলে যানজট কমানো সম্ভব।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সিইও মো. মিজানুর রহমান বলেন, যানজট নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ঢাকা থেকে আন্তঃজেলা বাস টার্নিমালগুলো সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পোস্তগোলা থেকে গাবতলী পর্যন্ত একটি ইনার সার্কুলার রোড নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে এ সমস্যা আরও নিরসন হবে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, যানজট নিরসনে পুরান ঢাকায় কিছু কিছু রাস্তায় ওয়ান ওয়ে কার্যক্রম চালু করতে হবে।

ইএআর/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।