ইন্টার্নি চিকিৎসক ৮ রোগের বিশেষজ্ঞ (!)


প্রকাশিত: ০২:৫৯ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

এমবিবিএস পাস ডা. তাসনুভ ফেরদৌস। তিনি একাই ৮টি রোগ যথাক্রমে মেডিসিন, বক্ষব্যধি, বাতবাথা, চর্ম, যৌন, গ্যাসষ্ট্রোলজি, লিভার ও হৃদরোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎক। এমনটা প্রচার চালিয়ে দীর্ঘদিন যাবত প্রাইভেট প্রাকটিস করে আসছিলেন তিনি। অন্যদিকে, ডা. তাসনুভ ফেরদৌস যে ডায়গনস্টিক সেন্টারে প্রাকটিস করেন সেখানকার ঝাড়ুদার রোগীর ইসিসি পরীক্ষা করেন।

চিকিৎসার নামে সাধারণ রোগীর সঙ্গে এমন প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয় বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর রূপাতলী হাউজিং স্ট্যাটে হেলথ ভিউ ডায়গনস্টিক সেন্টারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র‌্যাব-পুলিশ অভিযান চালানোর পর। ডা. তাসনুভ ফেরদৌসসহ ডায়গনস্টিক সেন্টারের ৮ কর্মচারীকে আটক করা হয় অভিযানকালে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তাদির হোসেন এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন।

যদিও আটকের পর ডা. তাসনুভ ফেরদৌস ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তাদির হোসেন জানান, ডা. ফেরদৌস স্বীকার করেছেন হেলথ ভিউ ডায়গনস্টিক সেন্টারটি যে অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছিল তা তার জানা ছিলনা। ডা. ফৌরদৌস ভূল স্বীকার করায় মুচলেকা রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ডা. তাসনুভ ফেরদৌসের ব্যবস্থাপত্রে দেখা গেছে, তিনি উল্লেখিত ৮টি রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

নিজেকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অনারারি মেডিকেল অফিসার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আটকের পর জানা গেছে, তিনি ইন্টার্নি শেষে হেলথ ভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রাকটিস শুরু করেন। অভিযানকালে হেলথ ভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে ডায়াগনস্টিক সরঞ্জাম নেই। অথচ তারা ইসিজি, আল্টাসনোগ্রামসহ সকল প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন।

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারী রুমা, মো. শহীদ, মো. মনির, মোস্তাফিজুর রহমান, মিলন, মো. হোসেন, সিরাজুল ইসলাম ও শাকিবকে অভিযানকালে আটক করা হয়। ঝাড়ুদার রুমা স্বীকার করেন, তিনি ইসিজি রিপোর্টে স্বাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সিল ব্যবহার করেন। অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা আটক হওয়া কর্মচারীরা করে থাকেন।

অভিযানকালে সেখানে উপস্থিত রোগী পারভীন বেগম জানান, একজন দালাল তাকে হেলথ ভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। ডা. তাসনুভ ফেরদৌস ৫০০ টাকা ফিস নেন এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বলেন। এজন্য হেলথ ভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিল হয়েছে ৪১০০ টাকা।

অভিযানকারী ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তাদির হোসেন জানান, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।