প্রাণ জাগালো মঙ্গল শোভাযাত্রা
লাখো মানুষের সমাগম। রমনার বটমূল থেকে ভেসে অাসছে সুপরিচিত সুরের বাংলা গান। সে সুরের দোহারী যেন সবাই। শিশু-কিশোর, আবাল, বৃদ্ধা সবাই হৈ হুল্লোরে ব্যস্ত। এমন শব্দমেলাতে হঠাৎ যোগ হয় ঢাকের শব্দ। যারা উৎসবে এসে নিরব ছিলেন, তাদেরও নিরবতা ভেঙ্গে যায় নিমিষেই।
নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের অায়োজনে বের করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ শোভাযাত্রা বের করেন। চারুকলার অায়োজন থাকলেও মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স অারেফিন সিদ্দিক। এছাড়া নেতৃত্বে থাকেন প্রশাসনের অন্যান্য কর্তা ব্যক্তিরাও।
এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘অন্তর মম বিকশিত করো, অন্তর তর হে’। মানুষের বিবেক জাগ্রত করার জন্য মায়ের কোলে শিশুর মোটিফ তৈরি করা হয়। ছিল প্রকৃতির প্রতি মানুষের ভালোবাসারও মোটিফ।
শোভাযাত্রায় লাখো মানুষ অংশ নেয়। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা আগুন্তকরা শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে প্রাণ খোলা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয় শোভাযাত্রাটি।
এবার শোভাযাত্রায় জীবন এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। সকল শ্রেণি-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে শোভাযাত্রায়। ১৯৮৯ সাল থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা সূচনা বলে জানা গেছে। এর পর থেকেই মঙ্গল শোভাযাত্রা দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে কথা হয় চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের সঙ্গে। জাগো নিউজকে
তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখ জাতীয় উৎসবে রূপ দিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখানে সর্বস্তরের মানুষের সম্মেলন ঘটছে। ধর্মভেদ কাজ করে না। সকলের কাছ থেকেই এই শোভাযাত্রা অভিনন্দিত হয়েছে। এটি একেবারেই বাঙালির নিজস্ব আয়োজন।”
বাঙালির সাংস্কৃতিক ক্ষুধা নিবারণে মঙ্গল শোভাযাত্রা সার্বজনীন রূপ পেয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
এএসএস/এমএইচ/আরএস/আরআইপি