কারওয়ান বাজার থেকেই হাটছে উৎসব মুখর মানুষ


প্রকাশিত: ০৩:৩০ এএম, ১৪ এপ্রিল ২০১৬

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে জন মানুষের স্রোত মিলিত হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, চারুকলা, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী  পার্কের দিকে। উৎসব মুখর মানুষের চলাচল নিরাপদ রাখতে বৃহস্পতিবার বৈশাখের প্রথম প্রহরের পর থেকে কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারা চত্বর থেকে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

তবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটর সাইকেল, রিকশা ও ভ্যান গাড়ি বাংলামোটর পর্যন্ত যেতে পারছে। বাংলামোটর মোড় থেকে কোনও ধরনের যানবাহন শাহবাগের দিকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তাই সাধারণ মানুষ পায়ে হেটে শাহবাগ, রমনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, চারুকলা ও টিএসসির দিকে যাচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলামোটরের এই রাস্তায় যান চলাচল পরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দেখা গেছে অ্যাম্বুলেন্স ও মিডিয়ার অনেক গাড়িও ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে হাসপাতাল থেকে বারবার ফোন করা হচ্ছে বলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার তার কার্ড দেখিয়ে শাহবাগের দিকে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।

গাবতলী, মিরপুর, কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর, উত্তরা, বনানী, বাড়িধারা ও গুলশানসহ এই দিকে থেকে আসা বাস ট্রাকসহ সব ভারী যানবাহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব গাড়িগুলো কারওয়ান বাজারের রেল ক্রসিং হয়ে বিজিএমই ভবন, সোনারগাঁও হোটেলের সামনে দিয়ে আবারো ঘুরে যাচ্ছে। যারা গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী বা অন্যদিকে যাবে ওই সব যাত্রীদের মন খারাপ হলেও বৈশাখী উৎসবে আসা মানুষ নেমে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে।

মোগল সম্রাট আকবর প্রণীত বাংলা সালের প্রবর্তন আর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে বাংলাদেশের মাটিতে মিশে গেছে এই বৈশাখ মাস। আকাশে বাতাসে বৈশাখের আহ্বান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  বলেছেন, পয়লা বৈশাখ নির্বিঘ্ন করতেই নিরাপত্তার এত আয়োজন।

বাঙালির মহামিলনের ক্ষণ পহেলা বৈশাখ। এটিই একমাত্র উদযাপন যা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে পালন করে আসছে এ বাংলার মানুষ। বুধবার সন্ধ্যায় সূর্য ডোবার সঙ্গে চৈত্র সংক্রান্তির মধ্যদিয়ে বিদায় নিয়েছে বাংলা ১৪২২ সাল। বৃহস্পতিবার ভোরের পর থেকে নতুন সূর্য  উঠার সঙ্গে এসেছে আরেকটি নতুন বছর ১৪২৩।

বৈশাখকে ঘিরে উদ্যান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-দোকান-রেস্তোরাঁ-হোটেলে আনন্দের উৎসব, শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ, যুবক-তরুণী মেতে উঠবে অনাবিল আনন্দে। ব্যবসায়ী পেশাজীবীসহ নানা সংগঠন নববর্ষকে বরণ করতে নিয়েছে নানান প্রস্তুতি।

নববর্ষকে সামনে রেখে নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ না পরার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তবে শোভাযাত্রা উপলক্ষে তৈরি মুখোশ হাতে রাখা যাবে।

শোভাযাত্রার ভেতরে, সামনে ও পেছনে পুলিশের বিশেষায়িত দল সোয়াত টিম নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে রমনা-শাহবাগ-টিএসসিসহ পুরো এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।

রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং টিএসসিতে তিনটি কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে।  টিএসসি, শাহবাগ ও রমনা পার্কে তিনটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে।

সন্ধ্যার পরে রাস্তায় হাঁটতে, রেস্তোরাঁয় বসতে কোনো নিষেধ নেই। শুধুমাত্র উন্মুক্ত স্থানে বড় ধরনের কনসার্ট বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। সন্ধ্যার পরে বাড়ির ছাদে ও রেস্তোরাঁয় উৎসব উদযাপন করা যাবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় এ বছর বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিকট শব্দ করে ভুভুজেলা বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

রমনা থানার সহকারী ট্রাফিক কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হেল বাকি বলেন, অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোন গাড়ি ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এমনকি মিডিয়ার গাড়িও না।গাড়ি চলাচল করলে মানুষ জন যেতে পারবে না, তাই বাংলামোটর থেকে কোন গাড়ি ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।যেসব গাড়ি আসছে সেগুলো আবার ফেরত পাঠানো হচ্ছে। নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

জেইউ/এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।