পরিবেশমন্ত্রী
সাভারের ট্যানারি থেকে নির্গত ধাতুর কারণে ক্যানসার হচ্ছে
সাভারের ট্যানারি থেকে ক্রোমিয়ামের মতো রাসায়নিক নির্গত হয় বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। মন্ত্রী বলেন, এই ধাতুর কারণে মানুষের ক্যানসার হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ অফিসে মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি ও ঢাকা কলিংয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সেখানে (ট্যানারি) বিশেষ করে আমরা যেটা বলি, ক্রোমিয়ামের যে বিষয়টা আছে, যেটা ভারী ধাতু, যেটার কারণে ক্যানসার হয়, মানুষ মারা যায়। সেই ক্রোমিয়াম আমাদের ট্যানারি থেকে বের হয়ে আসছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
‘আমরা এত বড় একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করলাম, হাজারীবাগ থেকে এটা স্থানান্তরিত করলাম। হাজারীবাগে যখন এটা ছিল, তখন আশপাশের নদীগুলোকে মৃত করলাম। এখন সেটা যেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে, সেখানকার আশপাশের নদীগুলোকে শেষ করছি। কাজেই এখানে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন আসা দরকার। ইনশাআল্লাহ সেটা আমরা করবো।’ যোগ করেন মন্ত্রী।
সাবের হোসেন বলেন, একটা ট্যানারিতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো সুযোগ থাকবে না, এটা হতে পারে না। আমাদের ট্যানারিতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কিছুই নেই।
ট্যানারির বর্জ্য আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, এতদিন শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বলা হতো, সেখানে দূষণ হচ্ছে না। কিন্তু তারাও এখন বুঝতে পেরেছেন, কারণ আমরা সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি। আগে আমরা যখন এ নিয়ে বলতাম, তখন মনে হতো আমরাই অপরাধী। কারণ পরিবেশ মানেই এসব কথা বলবে। কিন্তু এখন সমস্যা যে আছে, সেটা স্পষ্ট হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্জ্য থেকে আমরা যদি সার তৈরি করতে পারি, তাহলে প্রতি বছর আমরা যে পরিমাণ সার আমদানি করি, সেটা আমদানি না করে স্থানীয়ভাবে বর্জ্য থেকে তৈরি করতে পারবো।
‘একটা হচ্ছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সার্বিকভাবে সেটাকে কীভাবে উন্নত করা যায়, কার্যকর করা যায়, সেটাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। আরেকটা হচ্ছে, আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে বর্জ্য ব্যবহার করতে পারি, সেটাকে সম্পদে রূপান্তর করছি। এতে আমাদের অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।’ যোগ করেন পরিবেশমন্ত্রী।
সার আমাদানি কমবে বলেছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সার আমদানির যে স্পেসিফিকেশন আছে, সেটার সঙ্গে আমরা স্থানীয়ভাবে যেটা উৎপাদন করি, সেটার মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি না, সেটা দেখবো। কেননা আমদানির ক্ষেত্রে আমরা জানি, যারা সাপ্লাই করেন, তাদের স্বার্থ থাকে।
‘তারা স্পেসিফিকেশন একভাবে তৈরি করে নেন। আমরা দেখবো, বাংলাদেশে আমরা যে মানটা পাচ্ছি, সেটা যদি বিএসটিআই অনুমোদন দেয়, কৃষি মন্ত্রণালয় যদি উপযোগী মনে করে, তাহলে আমদানি কেন করবো? আমরা স্থানীয়ভাবে বর্জ্যটাকে সারে রূপান্তর করবো। এটা এখন পরীক্ষামূলক হচ্ছে, খুবই ছোটোমাপে।’ বলেন তিনি।
পণ্য থেকে যে বর্জ্য হয়, সেটার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব উৎপাদনকারীদের জানিয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আমরা এটা নিয়েও ভাবছি। এরই মধ্যে একটা গাইডলাইন তৈরি করে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলাপ করেছি। আমরা একতরফা একটা নীতিমালা তৈরি করতে চাই না। যে কারণে শিল্পখাতের সঙ্গে আলোচনা করে যেটা বাস্তবিক, সেটাই আমরা করবো।
আইএইচআর/ইএ/জিকেএস