নদীকৃত্য দিবসে বক্তারা
ভোট চাইতে এলে জিজ্ঞেস করবেন তুরাগ-বুড়িগঙ্গার জন্য কী করবেন
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেছেন, বিধাতা এই পৃথিবী সৃষ্টি করে অসংখ্য জলাধার দিয়েছেন, যেগুলো প্রাণের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু আমরা এসব জলাধার বিভিন্নভাবে নষ্ট করে ফেলছি। আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর একটা পৃথিবী রেখে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। কিন্তু নদী দখল-দূষণকারীদের নাম জানা সত্ত্বেও এদেরকে উচ্ছেদ করা বা শাস্তি প্রদানের আওতায় আনা যাচ্ছে না। তাই, যারা আগামী দিনে ভোট চাইতে আসবে তাদেরকে সরাসারি জিজ্ঞেস করবেন তারা তুরাগ-বুড়িগঙ্গার জন্য কী করবেন?
বুধবার (১৩ মার্চ) আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে ঢাকার গাবতলীর ল্যান্ডিং স্টেশন ঘাটে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন, প্রতীকী পরিচ্ছন্নতা, মাঝিদের মধ্যে ঝুড়ি বিতরণ ও মূকাভিনয় প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার, এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভস, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, অর্গানাইজেশন ফর ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল কনজারভেশনসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এসব কর্মসূচির আয়োজন করে।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা- ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা।
সভাপতির বক্তব্যে ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, ঢাকার নদীগুলো সংরক্ষণের নামে আমরা দূষিত নর্দমায় পরিণত করেছি। তুরাগ অববাহিকায় নদীর দখল মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে নদীর পানি কুচকুচে কালো ও দুর্গন্ধময়। তিনি নদী সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুধু আজকের দিন নয় বরং নদী রক্ষার জন্য প্রতিদিনই নদীর প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান।
রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, নদী পাড়ের মানুষকেই নদী সুরক্ষার জন্য সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। তারা সচেতন ও দায়িত্বশীল হলেই নদীর দখল-দূষণ রুখে দেওয়া সম্ভব।
সোলায়মান সুখন বলেন, যারা নদী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করে তারাই প্রকৃত মানুষ। নদী ও পরিবেশ রক্ষার এই কর্মসূচিতে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরার পরিবেশকর্মী মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, আজকের এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করছি। দখল-দূষণ যা হয়েছে তা কমিয়ে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন নদী দখল-দূষণমুক্ত থাকতে পারে সে ব্যাপারে আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে।
পরিবেশবাদী ও আইনজীবী জিএলটিএস লিডারশিপ প্লাটফর্মের সভাপতি রাওমান স্মিতা বলেন, আমরা সমস্যা জানি, সমাধানও জানি, কিন্তু সমস্যা সমাধানে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। নিজেদের জীবন বাঁচাতে নদী রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের এগিয়ে আসা ছাড়া উপায় নেই। তবে শুধু আলোচনা সভা, দিবস পালন করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা যাবে না। তরুণদের নেতৃত্ব নিতে হবে, নদী ও দেশ রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে।
আরএএস/কেএসআর/জিকেএস