চিনি কারখানায় আগুন
সাড়ে চার ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী
চট্টগ্রামের এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মিলে লাগা আগুন সাড়ে চার ঘণ্টা চেষ্টার পরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানি (১৫০ সদস্য) আগুন নির্বাপণে যোগ দিয়েছেন।
লে. কর্নেল আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আগুন একটি গোডাউন শেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
এদিকে ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেলের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মো. আনোয়ারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের ১৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আছে। গোডাউনে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিভছে না।’
এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ইকবাল হোসাইন জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আগুন নির্বাপণে কাজ করছে কোস্টগার্ড ও বিমানবাহিনীর একাধিক ইউনিট।
এর আগে রাত ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলের আগুন যেন ছড়িয়ে না পড়ে আমরা সেই চেষ্টা করছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার ১৮টি ইউনিট কাজ করছে। চিনির মিলের ছয়টি গোডাউনের মধ্যে আগুন এখনো একটিতে সীমাবদ্ধ আছে। এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।’
এস আলম সুগার মিলের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার হাসমত আলী বলেন, ‘কারখানার ১ নম্বর ইউনিটে আগুনের সূত্রপাত। পরে তা ২ নম্বর ইউনিটেও ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে ২ নম্বর ইউনিটের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এছাড়া মূল কারখানার যন্ত্রাংশ নিরাপদ রয়েছে।’
এদিকে শিল্প গ্রুপটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আসন্ন রমজান সামনে রেখে মজুত করা এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনির পুরোটাই আগুনে পুড়ে গেছে।
আরও পড়ুন
• এস আলমের কারখানায় আগুনে পুড়লো এক লাখ টন চিনি
বিষয়টি নিশ্চিত করে এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘রমজানের জন্য এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি মজুত করা হয়েছিল। চিনিগুলো ব্রাজিল থেকে আমদানি করা। আগুনের পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে সেই চিনি আর অবশিষ্ট নেই। ফলে রমজানে আমাদের পক্ষে বাজারে চিনি দেওয়া সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘মিল চালু থাকা অবস্থায় আগুন চারদিকে ছড়িয়ে যায়। ভেতরে কেউ আটকা পড়েছে কি না বা কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত এর কিছুই আমরা জানতে পারিনি। সাড়ে ঘণ্টায়ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন যাতে মূল কারখানায় ছড়িয়ে না যায় ফায়ার সার্ভিসকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সেই চেষ্টা করছি।’
এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, এস আলমের এ কারখানায় আমদানি করা কাঁচা চিনি পরিশোধন করা হয়। কারখানায় চার লাখ মেট্রিক টন ক্যাপাসিটি আছে। বিকেল ৪টার দিকে ইউনিট-ওয়ান এর গুদামে আগুনের সূত্রপাত। সেখানে এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি ছিল।
এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মিলে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও থাইল্যান্ড থেকে চিনির কাঁচামাল এনে পরিশোধন করা হয় দুটি প্ল্যান্টে। এর মধ্যে প্ল্যান্ট ১ এর উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৯০০ টন, প্ল্যান্ট ২ এর উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ টন। থাইল্যান্ড ও ফ্রান্সের প্রযুক্তি ও কারিগরি সহায়তায় এ কারখানাটি পরিচালিত হয়।
এর আগে গত শুক্রবার বাকলিয়া এক্সেস রোডে এস আলম গ্রুপের একটি হিমাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ইকবাল হোসাইন/ইএ/এমএস