বেইলি রোডে আগুন
ঢামেকে সারি সারি মরদেহ, স্বজনদের আহাজারিতে ভারী পুরো এলাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫৫ এএম, ০১ মার্চ ২০২৪
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে সারি সারি পড়ে আছে বেইলি রোডের ভবনে লাগা আগুনে নিহতদের মরদেহ। আপনজনদের মরদেহ নিতে মর্গের পাশেই অপেক্ষা করছেন স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে হাসপাতাল এলাকা যেন ভারী হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) ভোর ৫টা ২০ মিনিটে সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেলের মর্গ ও জরুরি বিভাগের সামনে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে নিহতদের মরদেহ নিতে স্বজনরা অপেক্ষা করছেন। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কেউ কেউ নিহত স্বজনের স্মৃতি মনে করে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশেই অস্থায়ী তথ্য ও সেবাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে স্বজনরা পূর্ণ ঠিকানাসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিয়ে মরদেহ বুঝে নেওয়ার প্রক্রিয়ার শেষ করছেন। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল মর্গ থেকে কোনো মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
আরও পড়ুন
- বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে ভিকারুননিসার শিক্ষকের মৃত্যু
- ছেলেদের কান্না থামাতে রেস্টুরেন্টে যান নাজিয়া, রইলো না বেঁচে কেউ
- আগুন-ধোঁয়ায় সেকেন্ডেই বাজবে ফায়ার এলার্ম
ডিএমপির রমনা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ সালমান ফারসী বলেন, এখনো মর্গ থেকে কোনো মরদেহ বের করা হয়নি। নিহতের স্বজনরা এসেছেন, কাগজপত্র যাচাই-বাছাই চলছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজ ভবনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১২ ইউনিট। এতে এখন পর্যন্ত ৪৩ জন নিহতের তথ্য মিলেছে।
রাজধানী ঢাকায় প্রায়ই বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। গত বছরের ২৬ অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। পরে ধাপে ধাপে আরও সাতটি ইউনিট যোগ দেয় সেখানে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের সহায়তায় যোগ দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী। ওই অগ্নিকাণ্ডে ভবনে থাকা তিনজন নিহত হন। তাদের মধ্যে দুজন নারী। একজন তার ধরে নামতে গিয়ে পড়ে মারা যান। আরেকজনের ভেতরে ধোয়ায় শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয়। নিহত অপরজন সাইফ পাওয়ার টেকের প্রকৌশলী।
আরও পড়ুন
- অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে চাইলে
- যেখানে পাবেন আগুন নেভানোর যন্ত্র
- অগ্নিনিরাপত্তায় গ্রাহকদের আস্থার প্রতীক ‘সেফমেট’
তারও আগে ৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে বঙ্গবাজারে। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সকাল ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মোট ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সাহায্যকারী দল যোগ দেয়। আগুন নেভাতে ব্যবহার করা হয়েছে হেলিকপ্টারও। নির্বাপণ কাজে ছিলেন র্যাব, পুলিশ ও ওয়াসার সদস্যরাও।
ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কী পরিমাণ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগুনে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার দোকান পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এনএস/কেএসআর