বেইলি রোডে আগুন

এবারও কি শোনা যাবে ফায়ার সেফটি- লাইসেন্স ছিল না?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৫ এএম, ০১ মার্চ ২০২৪

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গুলশানের একটি বহুতল আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে দুজনের মৃত্যু হয়। যথারীতি গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আগুন লাগা ভবনে কোনো ফায়ার সেফটি ও ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স ছিল না।

রাজধানীর বড় বড় অগ্নিকাণ্ডের প্রায় সব ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে আসে ভবনের দুর্বলতা। বাণিজ্যক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ভবন, বহুতল ভনে ফায়ার সেফটি, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স থাকার কথা থাকলে দুর্ঘটনার পর তদন্তে জানা যায় এসবের কিছুই ছিল না। অধিকাংশ দুর্ঘটনার পর জানা যায় ভবন তৈরির নীতিমালাও মানা হয়নি। ঘটনার পরপরই এসব নিয়ে কয়েকদিন ব্যাপক তোড়জোড় থাকলেও কদিন বাদে ভুলে যায় সব মহলই। মধ্যে চলে যায় কতগুলো তাজা প্রাণ, কতগুলো পরিবারের স্বপ্ন।

আরও পড়ুন: বেইলি রোডে আগুনে নিহত ৪৩ 

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বেইলি রোডের বাণিজ্যিক ভবনে লাগা আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত অনেকে। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

রাত সোয়া ১টায় ঘটনাস্থলে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দীন বলেন, রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই ভবনে একাধিক রেস্টুরেন্ট ছিল, ছিল সিলিন্ডারও। এজন্য ভবনটি ছিল অগ্নিচুল্লির মতো। যার জন্য দাউ দাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি ও ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার ও ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর।

আরও পড়ুন: কাচ্চি খেতে এসে দুই সন্তানসহ প্রাণ গেলো মায়ের 

এবারও কি তদন্তে একই ঘটনা বেরিয়ে আসবে? সে সম্ভাবনাই প্রবল!

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘দ্বিতীয় তলা ছাড়া ভবনটার প্রতিটি ফ্লোরের সিঁড়িতে ছিল সিলিন্ডার। যেটা খুবই বিপজ্জনক ব্যাপার। কারণ, আগুন লাগলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়, যা ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। ভবনটা মনে হয়েছে অনেকটা আগুনের চুল্লির মতো।’

এর ইঙ্গিত মিলছে সাংবাদিক, কলামিস্ট দেব দুলাল গুহের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসেও। তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘একটা বিল্ডিংয়ের পুরোটাই রেস্টুরেন্টের দখলে, যেখানে গ্যাসের সিলিন্ডার আছে, কিন্তু মেয়াদি অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার নাই, বাইরের দিকে জরুরি বিকল্প সিঁড়িও নাই! ৩৫ কেজির গ্যাস সিলিন্ডারগুলো রেখে দিছে সিঁড়িতে! আগুনটা তাহলে নেভানো হবে কীভাবে? আর মানুষ মরবে না কেন, নিচে নামবে কি সিঁড়িতে রাখা গ্যাস সিলিন্ডারের আগুনের মধ্য দিয়ে? খেতে ডাকে মানুষকে, নাকি মরতে? শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট না থাকলে মৃতের পরিমাণ আরও বাড়তো।’

আরও পড়ুন>> ছাদ থেকে সপরিবারে নিরাপদে নেমেছেন অধ্যাপক কামরুজ্জামান

‘বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে মৃত-আহত সবার জন্য শোক জানাচ্ছি। ফায়ার সার্ভিস তৎপর আছে, পুলিশ তৎপর আছে। উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকুক। কাচ্চি ভাইয়ের বিরিয়ানি খাই আমি ঢাকায় গেলেই। তাদের জন্যও খারাপ লাগছে। আবার কেউ কেউ বলছে কাচ্চি ভাই থেকেই নাকি আগুনের সূত্রপাত! তবে বেশিরভাগের দাবি নিচতলা থেকেই আগুনের সূত্রপাত।’

‘আশা করি তারাসহ বাকি সব ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালিকেরা দ্রুত এই দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। এখন পর্যন্ত মৃত কমপক্ষে ৪৩ জনের আত্মার শান্তি কামনা করছি’, যোগ করেন দেব দুলাল গুহ।

এএসএ/কেএসআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।