র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ পর্যবেক্ষণ
বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেক্ষেত্রে মার্কিন প্রতিনিধিদল পাঁচটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে তারা ক্রমাগতভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে এবং রোহিঙ্গাদের এখানে যে আমরা আশ্রয় দিয়েছি সেক্ষেত্রে তারা সর্বাত্মক সহায়তা করছে, সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার ব্যাপারে আমি তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যে আজ আমাদের সবাইকে ভোগাচ্ছে এবং করোনা মহামারির পর এই যুদ্ধ হঠাৎ করে বেঁধে যাওয়া আমাদের সবার জন্য হতাশার বিষয় ছিল সে বিষয়গুলো আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বৈঠকের প্রসঙ্গটি এখানে আলোচিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আলোচনা করেছি। নিরাপত্তা ইস্যুতে আমাদের বহুমুখী সহায়তা আছে, আমরা একসঙ্গে কাজ করি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের পরিচিতি আছে। র্যাবের স্যাংশনস তুলে নেওয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তারা পাঁচটি অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) দিয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। কীভাবে এটি তুলে নেওয়া যায় সেটি নিয়ে তারাও কাজ শুরু করেছে, তাদের অবজারভেশনগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদের যে বিনিয়োগ সেটি নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। সেটি কীভাবে বাড়ানো যায়, আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় তারা কীভাবে আরও বেশি সহযোগিতা করতে পারে সেটি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
আরও পড়ুন>> র্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ
র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যে পাঁচটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে সেগুলো কী কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই অবজারভেশনগুলো আমাদের কমিউনিকেট করেছে, তারা বিস্তারিত দিয়েছে। এটা র্যাবের কাছে দেবে, যখন আমরা পাবো তখন এটি নিয়ে কাজ করবো। তারা পাঁচটি অবজারভেশন দিয়েছে সেগুলো বিস্তারিত পাওয়ার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।
ড. হাছান বলেন, আমাদের উভয় দেশেরই উইলিংনেস (ইচ্ছা) যে আমাদের সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। প্রতিনিধিদলের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল এইলিন লুবাখার আমাকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন।
বিএনপি এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদলের বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, মানবাধিকার নিয়েও আলোচনা হয়নি।
আরও পড়ুন>> বাইডেনের চিঠির জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দুটি সামরিক চুক্তি বিগত সরকারের সময় অনেকদূর এগিয়েছিল, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নির্দিষ্ট কোনো চুক্তি নিয়ে আলোচনা করিনি। তবে জিসুমিয়া নিয়ে আমরা কাজ করছি।
মিয়ানমার পরিস্থিতির জন্য বে অব বেঙ্গল নিয়ে তাদের উদ্বেগের বিষয়ে কিছু জানিয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমার পরিস্থিতির কারণে আমাদের এখানে যে সিকিউরিটি ইস্যু তৈরি হয়েছে সেটি তো সঠিক। কারণ মিয়ানমার থেকে ৩৩০ জন তাদের সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্য এখানে পালিয়ে এসেছিলেন, তারা আবার তাদের ফিরিয়েও নিয়ে গেছে। সেখানে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং আরাকান আর্মির সঙ্গে যে সরকারি বাহিনীর সংঘাতের কারণে আমাদের এখানে যে নিরাপত্তা ঝুঁকি হয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। রোহিঙ্গাদের সসম্মানে সব অধিকার দিয়ে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে তারা একমত। নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, সেটি নিয়েই আলোচনা করেছি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
আইএইচআর/ইএ/জেআইএম