গ্রামীণ ব্যাংক
ড. ইউনূসের বক্তব্য স্ববিরোধী ও আইনের অপব্যাখ্যার শামিল
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেকে গ্রামীণ টেলিকম ভবনের প্রতিষ্ঠানসমূহের চেয়ারম্যান দাবি করেছেন। তবে গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ড. ইউনূসের এই দাবি স্ববিরোধী ও আইনের অপব্যাখ্যার শামিল।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) গ্রামীণ ব্যাংকের মিডিয়া সেলের প্রধান আঞ্জু আরা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ড. ইউনূসের পক্ষে বলা হয়েছে, সরকারি আদেশবলে তৈরিকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক কখনোই আইনগতভাবে কোনো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সৃষ্টি করা বা উহার মালিক হতে পারে না। এই বক্তব্য স্ববিরোধী ও আইনের অপব্যাখ্যার শামিল।
আরও বলা হয়, সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংকের দরিদ্র ও ভূমিহীন সদস্যদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ। তারই অংশ হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের গত ১২ ফেব্রুয়ারি ১৫৫তম বোর্ড সভায় গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণসহ সাতটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বোর্ডে চেয়ারম্যান ও নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কোনো উদ্যোগ নিইনি: ড. ইউনূস
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এ বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি সংবাদ সম্মেলন করে বেশ কিছু বিভ্রান্তমূলক, অসত্য, বেআইনি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন, যা ১ কোটি ৫ লাখ সদস্য ও তাদের পরিবারের অধিকার খর্ব করার শামিল। তাই গ্রামীণ ব্যাংক এ বিষয়ে সঠিক তথ্য উল্লেখ করে নিজেদের বক্তব্য ও ব্যাখ্যা জাতির সামনে প্রকাশ করাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা-প্রথমেই জেনে নেওয়া দরকার, গ্রামীণ ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতা ও সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের চেয়ারম্যান ও নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার আইনি এখতিয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের রয়েছে।
আরও পড়ুন: নিজের বাড়িতে অন্য কেউ তালা মারলে কেমন লাগে
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তনের বিষয়ে ড. ইউনূসের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন পরিবর্তন করে চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিচালক মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষমতা বিলুপ্ত করা হয়েছে। তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেননা প্রতিষ্ঠানটি গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৮৩ ধারা প্রতিষ্ঠিত একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যার মালিক বাংলাদেশ সরকার ও এর ঋণগ্রহীতা শেয়ারহোল্ডারগণ। এমনকি এ বিষয়টি বাংলাদেশের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ১৯৯৬ সালে ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৪২তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ড. ইউনূসের প্রস্তাবেই খোদ গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এইসব আইনি বিধান মেনেই গত ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের ১৫৫তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ব্যাংকের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট প্রতিনিধিরা গ্রামীণ টেলিকম ভবনে অবস্থিত ছয়টি প্রতিষ্ঠানে যান।
আরও পড়ুন: গ্রামীণ টেলিকম ভবন তালাবদ্ধ, ঢুকতে পারছেন না ড. ইউনূস
সংবাদ সম্মেলনে তারা জবরদখলের অভিযোগ তুললেও প্রকৃত পক্ষে সেদিন তারা ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাদরে অভ্যর্থনা জানান এবং আপ্যায়ন করেন। প্রতিনিধিরা নিয়ম মেনে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের চিঠি হস্তান্তর করেন।
এসএম/জেএইচ