লাভের ধারায় ফিরেছে বিমান


প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০১৬

রাষ্ট্রায়ত্ত আকাশ পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লাভের ধারায় ফিরেছে। বেড়েছে উড়োজাহাজ, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যাত্রী সংখ্যাও। বিগত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিমান ২০ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৫ জন যাত্রী পরিবহন করেছে। রাজস্ব আয় করেছে চার হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। এ রাজস্বের বিপরীতে সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ ২৯২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সব খরচ বাদ দিয়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সংস্থাটি লাভ করে ২৭২ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যদিও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তাদের লোকসানের পরিমাণ ছিল ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুধু যাত্রী নয়, কার্গো বহন করেও বিমান বিপুল রাজস্ব আয় করে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিমান ৪৩ হাজার ৯২৪ টন কার্গো পরিবহন করে, যা ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ৩৩ হাজার ৫৫০ টন। এছাড়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব আয় করে ৫৫০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। একইভাবে বিমানের নিজস্ব ক্যাটারিং বিএফসিসি ওই সময়ে লাভ করেছে ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং নিজস্ব পোলট্রি শাখা লাভ করেছে ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এখন লাভের ধারায় ফিরেছে। বিগত অর্থবছরে বিমানের লাভের কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বিমান এখন বেশির ভাগ রুট নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে রুট চালাচ্ছে। লিজে না চালিয়ে নিজস্ব বহরে থাকা উড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করার কারণে বিমান ইতিবাচক ফল পাচ্ছে। অন্যান্য বছরের মতো চড়া সুদে লিজে উড়োজাহাজ না নিয়ে গত বছর নিজ বহরে থাকা দুটো বোয়িং ৭৭৭ দিয়ে ৫৪ হাজার ৮৪৫ হজযাত্রী বহন করে বিমান। তবে এখনো বিমানে ছয়টি লিজে নেয়া উড়োজাহাজ রয়েছে। আর লাভের এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠা পরবর্তী অব্যাহত লোকসান থেকে বেরিয়ে আসতে ২৩ জুলাই ২০০৭ সালে বিমানকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করে সরকার। সে সময় বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি করার আগ পর্যন্ত বিমানের মোট লোকসানের পরিমাণ ছিল এক হাজার ১৮২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

পাবলিক লিমিটেড করার পর ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৫ কোটি ১৯ লাখ ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা মুনাফা করে বিমান। কিন্তু ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে আবারো লোকসান দিতে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৮০ কোটি, ২০১০-১১ অর্থবছরে ১৯১ কোটি, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬০০ কোটি ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২১৪ কোটি টাকা লোকসান করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

বর্তমানে বিমানের বহরে উড়োজাহাজ রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর ও দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর, দুটি এয়ারবাস এ৩১০-৩০০, চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এবং দুটি ড্যাস ৮-কিউ৪০০ উড়োজাহাজ।

এছাড়া আগামী ২০১৯-২০২০ সাল নাগাদ বিমানের বহরে যুক্ত হবে আরো চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮০০ উড়োজাহাজ। এরমধ্যে রয়েছে বোয়িং এর সর্বশেষ সংস্করণ ড্রিমলাইনার।

আরএম/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।