চট্টগ্রামে আর পাহাড় না কাটতে সিডিএসহ ১০ প্রতিষ্ঠানকে বেলার নোটিশ
চট্টগ্রামে নতুন করে পাহাড় না কাটতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানসহ ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
এছাড়া বেলার পক্ষ থেকে নোটিশ পেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, নগর পুলিশের কমিশনার এবং পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাকিয়া সুলতানা নোটিশগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বেলার চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনীরা পারভীন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ এ বিভাগের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার সব পাহাড় কাটা বন্ধে ২০১১ সালে বেলা একটি জনস্বার্থমূলক মামলা (নং ৭৬১৬/২০১১) দায়ের করে। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১২ সালের ১৯ মার্চ আদালত উল্লিখিত জেলাগুলোর সব পাহাড় কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে আদালত উল্লিখিত এলাকায় পাহাড় কেটে কোনো আবাসন প্রকল্প বা ইটভাটা স্থাপন করা হয়ে থাকলে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বন উজাড় বন্ধ করতে এবং পাহাড়ি প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের আধার অক্ষুণ্ন রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলে বেলা পাহাড় কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন দাখিল করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি এ বিভাগের সব পাহাড়ের তালিকা (দাগ, খতিয়ানসহ) এবং পাহাড়গুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রস্তুত ও তা আদালতে জমা দেওয়া এবং আদালত ২০১২ সালের ১৯ মার্চে প্রদত্ত রায়ের আলোকে পাহাড় কাটা রোধে সরকারি সংস্থাগুলো কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে বিষয়ে ৩ মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বশেষ বিদ্যমান পাহাড়গুলোকে আরও ক্ষতি, ধ্বংস ও কাটা পড়া থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, পাহাড় কাটা বিষয়ে আদালতের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা প্রতিটি পাহাড়ে প্রদর্শন করা এবং এরই মধ্যে কাটা হয়েছে এমন পাহাড়গুলোতে দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষরোপণ এবং রিটেইনিং ওয়াল স্থাপনের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দেন আদালত।
নগরের বায়েজিদ–ফৌজদারহাট লিংক রোড স্থাপনে সাত বছর আগে ১৬টি পাহাড় কেটেছে সিডিএ। ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে নগরের সহজ যোগাযোগ করতে ছয় কিলোমিটারের ওই সড়ক নির্মাণ করে সিডিএ প্রশংসার চেয়ে পাহাড় কাটার কারণে বদনামের ভাগী হয়েছে বেশি। এজন্য এখনো সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সরকারি এই সংস্থাটিকে। খাঁড়াভাবে কাটায় পাহাড় ধসে বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি আছে। তবে এবার সেই ঝুঁকি নিরসনের অজুহাতে আবারও ৫টি পাহাড় কাটতে চায় সিডিএ।
আবু আজাদ/এমআরএম/জেআইএম