মিয়াতার লাশ দূতাবাসে হস্তান্তর


প্রকাশিত: ০৭:২০ এএম, ০৮ এপ্রিল ২০১৬
ফাইল ছবি

হত্যার প্রায় পাঁচ মাস পর জাপানি নারী হিরোয়ি মিয়াতার (৬১) লাশ দেশটির ঢাকাস্থ দূতাবাস কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের পর ২৭ নভেম্বর থেকে লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের হিমাগারে ছিল।

শুক্রবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে জাপান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি সুজি ওনু ও সেকেন্ড সেক্রেটারি কজু মাতসোনাগা মিয়াতার লাশ গ্রহণ করেন। এ সময় পুলিশের পক্ষে উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মুশফিক রহমান উপস্থিত ছিলেন।

তিনি  এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দূতাবাসের কর্মকর্তারা লাশ কোথায় নেবেন, তা পুলিশকে জানান নি।
প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাকায় ছিলেন হিরোয়ি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে সিটি হোমস নামে একটি আবাসিক হোটেলে থাকতেন। ঢাকার কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়া জাপান সরকারের পেনশনও পেতেন।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর জাপান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানায় হিরোয়ি মিয়াতা নিখোঁজ রয়েছেন বলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এই জিডির তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে ২৯ অক্টোবর মিয়াতার মৃত্যুর পর তাঁর পরিচয় ও নাগরিকত্ব গোপন করে হালিমা খাতুন নামে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মিয়াতা প্রতি সপ্তাহে তার মাকে ফোন করতেন। গত বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার মা মিয়াতাকে খুঁজে বের করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে ঢাকায় জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন।

জাপান দূতাবাসের অনুরোধে পুলিশ মিয়াতার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করে। হিরোয়ি মিয়াতাকে অপহরণের পর খুন করে লাশ গুম করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করেছে পুলিশ।

ঘটনার পর ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন মো. মারুফুল ইসলাম (৩০), রাশেদুল হক ওরফে বাপ্পী (৪২), ফখরুল ইসলাম (২৭), বিমলচন্দ্র শীল (৪০) ও মো. জাহাঙ্গীর (২৮)। এদের মধ্যে বিমল পেশায় চিকিৎসক।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী। মিয়াতার মাধ্যমে তারা জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতেন।

জিডির পরে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে এজাহারভুক্ত আসামি জাকিরুল ইসলাম পাটোয়ারি (৪২) ও মারুফুল ইসলাম মিয়াতার ব্যবসায়ী অংশীদার। তারা মিয়াতাকে সিটি হোমস হোটেলে রাখতেন। রাশেদুল সুকৌশলে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফখরুলের বাসায় আটকে রেখে তার স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে।

এজাহারে বলা হয়, বিমলচন্দ্র শীলের উপস্থিতি ও সহায়তায় পাঁচ আসামি ২৯ অক্টোবর ভোররাত চারটার দিকে সুকৌশলে মিয়াতাকে হত্যা করে। ওই দিন বিকেলে মারুফুল মিয়াতার লাশ সমাহিত করে। মিয়াতার ল্যাপটপটি রাশেদুলের প্রতিষ্ঠান থেকে জব্দ করে পুলিশ।

এমএমজেড/এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।