কাজ করছে না অ্যাপ, এসএমএসে তথ্য দিচ্ছেন প্রিসাইডিং অফিসাররা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:১৭ পিএম, ০৭ জানুয়ারি ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের কেন্দ্র থেকে প্রিসাইডিং অফিসারদের ভোট পড়ার তথ্য দেওয়ার জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সকাল ১০টা, দুপুর ১২টা ও ২টা এবং বিকেল ৪টায় ভোট পড়ার তথ্য দেয়ার কথা প্রিসাইডিং অফিসারদের। তবে সকাল ১০টায় তথ্য দেওয়ার পর আর অ্যাপে তথ্য দিতে পারছেন না প্রিসাইডিং অফিসারা।

রোববার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের ভোট কেন্দ্র ঘুরে প্রিসাইডিং অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। মোবাইল অ্যাপে তথ্য দিতে না পেরে প্রিসাইডিং অফিসাররা মোবাইলে এসএমএস দিয়ে ভোট পড়ার তথ্য দিচ্ছেন।

প্রিসাইডিং অফিসাররা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের চালু করা মোবাইল অ্যাপে ঢুকে সকাল ১০টায় আপডেট দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু দুপুর ১২টার আপডেট দিতে গেলে অ্যাপ আর কাজ করছে না। তাই বাধ্য হয়ে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে তথ্য পাঠানো হচ্ছে। অবশ্য কোনো কোনো প্রিসাইডিং অফিসার জানিয়েছেন, মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার না করে তারা শুরু থেকেই এসএমএস দিয়ে তথ্য দিচ্ছেন।

এদিকে রাজধানী ঢাকাতে ঝামেলা ছাড়াই বেশ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। তবে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বেশ কম। কোনো কোনো কেন্দ্র প্রথম পাঁচ ঘণ্টায় ৭-৮ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে।

রামপুরা সালামবাগ জামে মসজিদ ও জামিয়া আনওয়ারুল উলূম মাদরাসা ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন ফয়সাল বার্ক। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ভোট পড়ার তথ্য দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে। মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে সকাল ১০টার তথ্য দিয়েছি। কিন্তু দুপুর ১২টার আপডেট অ্যাপে আর দিতে পারিনি।

তিনি বলেন, অ্যাপে ঢোকা যাচ্ছে। কিন্তু দুপুর ১২টার আপডেটের জন্য যে অপশন চালু করা হয়েছে, সেখানে ক্লিক করলে আর কাজ করছে না। ফলে অ্যাপের মাধ্যমে আপডেট দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই মোবাইলে এসএমএস দিয়ে তথ্য দিয়েছি। মোবাইল অ্যাপে সকাল ১০টা, দুপুর ১২টা ও ২টা এবং বিকেল ৫টায় ভোট পড়ার আপডেট দেওয়ার কথা।

ভোটার উপস্থিতির তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুপুর ১টা পর্যন্ত আমার অধিনে থাকা ৪টি বুথে ২৩৮ জন ভোট দিয়েছেন। পুরুষ ভোটারদের জন্য স্থাপন করা এই চার বুথে ভোট ভোটার রয়েছেন ২ হাজার ৭ জন।

ভোটার উপস্থিতি কম হলেও ভোটের পরিবেশ খুব ভালো বলে জানান এই প্রিসাইডিং অফিসার। তিনি বলেন, এখানে ভোটের পরিবেশ খুবই ভালো। মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছে। কারো উপর কোনো ধরনের চাপ নেই।

মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ভোট পড়ার তথ্য দিতে না পারার কথা জানান পূর্ব রামপুরা হাই স্কুল ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার নাঈমুজ্জামান। তিনি জানান, সকাল ১০টার পর থেকে মোবাইল অ্যাপ কাজ করছে না। এ কারণে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে ভোট পড়ার তথ্য দিচ্ছি।

তিনি বলেন, আমার অধীনে ৪টি বুথ রয়েছে। নারী সদস্যদের স্থাপন করা এই চার বুথে মোটা ভোটার রয়েছেন ২ হাজার ৩৯৮ জন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এখানে ১৬০ জন ভোট দেন। দুপুর ১টার দিকে সেই সংখ্যা বেড়ে ২০০ এর মতো হয়েছে। ধীরে ধীরে ভোটার সংখ্যা বাড়ছে। কোনো প্রকার ঝামেলা, হয়রানি ছাড়াই তারা ভোট দিতে পারছেন। সকাল ১০টা পর্যন্ত মাত্র ৬০ জন ভোট দিয়েছিলেন। দুপুর ১২টায় ১৬০ জন হয়ে গেছে। আমরা ধারণা করছি দুপুর ২টায় আড়াইশ’ ছাড়িয়ে যাবে।

দিদার আদর্শ কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন মো. সামসুজ্জোহা জাগো নিউজকে বলেন, ভোট পড়ার তথ্য আপডেট দেয়ার জন্য মোবাইল অ্যাপ আছে। কিন্তু মোবাইল অ্যাপ ঠিকমত কাজ করছে না। তাই অ্যাপে তথ্য দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা মোবাইলে এসএমএস দিয়ে তথ্য পাঠাচ্ছি।

ভোটার উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে খুব সুন্দর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোনো ধরনের চাপ নেই। খুবই স্বচ্ছ ও সুন্দর পরিবেশ ভোট গ্রহণ চলছে। দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩০০ ভোট পড়েছে। এখানে পুরুষ ভোটদের জন্য ৪টি বুথ আছে। আর মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৯৪৭ জন। মানুষ কাজ শেষ করে ভোট দিতে আসছে। এ জন্য সকালের দিকে ভোটার সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। এখন আস্তে আস্তে ভোটার সংখ্যা বাড়ছে। আমরা আশা করছি দিনশেষে ভালো ভোট পড়বে।

গ্রিন গার্ডেন ল্যাবরেটরি হাই স্কুল ভোট কেন্দ্রটিতে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করা মাহাবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোটের তথ্য দেয়ার জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে। কিন্তু আমি অ্যাপে লগিং করতে পারছি না। এ কারণে সকাল থেকেই মোবাইলে এসএমএস দিয়ে ভোটের তথ্য দিচ্ছি। আমরা সকাল ১০টা ও ১২টার আপডেট দিয়েছি। এখন দুপুর ২টা ও বিকেল ৪টায় আপডেট দেবো।

ভোটার উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এখানে সবাই নারী ভোটার। সকালে নারীদের বাসায় বিভিন্ন কাজ থাকে। সংসারের কাজ গুছিয়ে নারীরা ভোট দিতে আসছেন। সকালে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও ধীরে ধীরে বাড়ছে। এখানে নারী ভোটারদের জন্য ৪টি বুথ রয়েছে। এই চার বুথে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৭১০ জন। এর মধ্যে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ১২৬ জন।

এমএএস/এসএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।