বেনাপোল এক্সপ্রেসের আগুন পরিকল্পিত: ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার
রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন নাশকতা এবং পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার মহিদ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘এটি যে নাশকতা সেটি স্পষ্ট। এটা বোঝাই যায় যে ইচ্ছা করে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। যারা করেছে আমরা মনে করি তাদের আইনের কাছে যেতে হবে।’
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাতে গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার স্থানে পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘তিনটি কম্পার্টমেন্ট কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ এই মুহূর্তে বলা যাবে না, কী কারণে হয়েছে। তবে এটি যে নাশকতা সেটি স্পষ্ট। এটা বোঝাই যায় যে ইচ্ছা করে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।’
‘এ ধরনের অমানবিক ঘটনা সাধারণ যাত্রীর প্রতি, সাধারণ মানুষের প্রতি, শিশুর প্রতি, নারীর প্রতি এ ধরনের সহিংসতা ও আগুনে পুড়িয়ে মারা- এটি কোনো মানুষ গ্রহণ করতে পারে না। আমরা মনে করি তাদের খুঁজে বের করা হবে এবং তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের যারা ছিলেন তারা অগ্নিনির্বাপণের কাজ করেছেন। লাইফ সেভ করা তখন প্রথম কাজ, সেটি তারা করেছেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব সদস্যরা এখানে এসেছেন। আমাদের অফিসাররা এখানে আছেন, সবাই সহায়তা করেছেন।’
খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা জানি উৎসুক মানুষ ভিড় করে, সে কাজটি হয়েছে। এখন ফায়ার সার্ভিসের যারা আছেন তারা ভিতরে সুইপ করছেন। আমাদের যারা ইনভেস্টিগেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তারাও এসেছেন। তারা এখান থেকে যে আলামত আছে সেগুলো কালেকশন করবেন। আমরা চেষ্টা করবো এটি কোথা থেকে আসছে তার উৎস খুঁজে বের করা।’
ঘটনা ঘটলে আপনারা খুঁজে বের করবেন, এর আগে কি কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হবে না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘দেখুন প্রস্তুতি নেওয়া আছে বলেই কিন্তু নাশকতাকারীরা যত ঘটনা ঘটাতে চায় ....। আপনি দেখবেন গত ১৫ দিনে আমরা কতগুলো প্রতিহত করেছি। তাদের নাশকতাকে নীরবে প্রতিহত করেছি। এর কোনো হিসাব নেই।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ইনসিডেন্ট যখন ঘটানো হয় তখন কাউন্ট করা যায়। যেগুলো আমরা প্রতিহত করি সেগুলোর হিসাব নেই। নাশকতাকারীরা কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এটি সত্য এবং সে কারণে অনেককে আইনের কাছে নেওয়া হয়েছে, অনেকে চিহ্নিত হয়েছে। আজ না হোক কাল তারা চিহ্নিত হবে।’
হরতাল শুরু হওয়ার আগের দিন কোনো না কোনো একটি ইনসিডেন্ট ঘটানো হয়, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘এটির প্রধান কারণ হলো মানুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করা। মানুষের যে নরমাল লাইফ সেটি যেন স্বাভাবিক না থাকে। মানুষের যে আইনি, সাংবিধানিক বা জীবনের যে ধারা সেটি যেন স্বাভাবিক না থাকে, সেটি যেন বাধাগ্রস্ত হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়- এই নাশকতার উদ্দেশ্য এছাড়া কী হতে পারে। জীবন্ত মানুষকে, ট্রেনের যাত্রীকে, শিশুকে, নারীকে পুড়িয়ে মারবেন... কী হতে পারে পরিকল্পিত নাশকতা ছাড়া।
শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন লাগে। এখন পর্যন্ত চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আহত অনেকে।
এমএএস/এএসএ/বিএ