গবেষণা
থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে এক ঘণ্টায় বায়ুদূষণ বাড়ে ৩৫ শতাংশ
ইংরেজি নববর্ষে থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে ঢাকায় আতশবাজিতে এক ঘণ্টায় ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণ হয়েছে। রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১১টা থেকে ১২টার তুলনায় পরবর্তী এক ঘণ্টা রাত ১২টা থেকে ১টায় বায়ুদূষণের পরিমাণ প্রায় ৬৪ মাইক্রোগ্রাম বা ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এসময় সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ রেকর্ড হয় ২৪৯ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার, যা বায়ুমান সূচকে ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে পরিচালিত এ গবেষণায় নববর্ষ উদযাপনের কয়েক ঘণ্টা আগে ও পরে বায়ু এবং শব্দদূষণের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। ক্যাপস’র এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ক্যাপসের গবেষণাকারী দল গত ৭ বছর ধরে বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বায়ু ও শব্দদূষণের তীব্রতা পর্যবেক্ষণ করে আসছে।
বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাপস জানায়, আতশবাজি, পটকা বা এ জাতীয় শব্দ সৃষ্টিকারী বস্তু সাধারণত পটাসিয়াম পারক্লোরেট, বিষাক্ত বেরিয়াম নাইট্রেট, পার্লাইট পাউডার, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম খাদ ও মাটি-পাথর ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হয়। এগুলো পোড়ানোর ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বায়ুদূষণকারী পদার্থ নির্গত করে, যার মধ্যে রয়েছে বস্তুকণা ২ দশমিক ৫ ও বস্তুকণা ১০, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড এবং কার্বন মনোক্সাইড ইত্যাদি। এই দূষকগুলো হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস এবং ফুসফুসের ক্যানসারসহ বিভিন্ন ধরনের শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।
ক্যাপসের গবেষণাকারী দলের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে, ৩১ ডিসেম্বর দিনগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুরু করে ভোর ৫টা পর্যন্ত আতশবাজি ও পটকা ফুটানো হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হয়েছে রাত ১২ থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। ২০২৪ সালের প্রথম ঘণ্টায় শব্দদূষণের হার আগের দিন ৩০ ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এবং বেশিরভাগ সময় শব্দের মাত্রা ৮০ থেকে ৯০ ডেসিবলের মধ্যে ছিল।
ক্যাপস জানায়, ৭০ ডেসিবলের অধিক শব্দ মানুষসহ পশু-পাখির কানের বধিরতা সৃষ্টি করতে সক্ষম। এমনকি এই শব্দ গর্ভপাত, শিশুমৃত্যু ও বয়স্কদের হার্টের ঝুঁকিও বাড়ায়। নববর্ষ উদযাপনের এই প্রচণ্ড শব্দে পাখিরা উড়াউড়ি করে এবং গাছে বা বিল্ডিংয়ের দেয়ালে আঘাত পেয়ে নিচে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে, এমনকি মারাও গিয়েছে।
এএএম/এমকেআর