উল্টোপথে যেতে বাধা

ট্রাফিক সদস্যের মাথা ফাটালেন ময়লার গাড়িচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৮ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

অডিও শুনুন

কামরাঙ্গীরচর এলাকায় সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ভ্যানগাড়ি উল্টো পথে যেতে বাধা দেওয়ায় কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলের ওপর হামলার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার ওই ব্যক্তির নাম-ইসমাইল হোসেন জীবন (২৪)। সোমবার রংপুর জেলার গঙ্গাচরা থানার গঙ্গাচড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ময়লার গাড়ি চালান।

এর আগে ২১ ডিসেম্বর দুপুরে কর্তব্যরত কনস্টেবল মতিয়ার রহমানের (৫০) ওপর হামলা করেন জীবন। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। বর্তমানে ট্রাফিক কনস্টেবল মতিয়ার চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২০ ডিসেম্বর দুপুরে কামরাঙ্গীরচর থানার সেকশন বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ভ্যানগাড়ি উল্টো পথে যাওয়ার সময়ে ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল মতিয়ার রহমান বাধা দেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে যায় ইসমাইল হোসেন জীবন। পরবর্তীতে উপস্থিত অন্য পুলিশ সদস্য ও সার্জেন্টরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। কিন্তু তাকে বাঁধা দেওয়া ও কথা কাটাকাটির জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাফিক সদস্য মতিয়ারের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন।

পর দিন (২১ ডিসেম্বর) একই স্থানে দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবল মতিয়ার দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কাঠের স্ট্যাম্প দিয়ে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করেন জীবন। হামলায় কনস্টেবল মতিয়ারের মাথা ফেটে গুরুত্বর আহত হন। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পরবর্তীতে ন্যাশনাল ইন্সটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আহত ট্রাফিক সদস্যের ছেলে সাব্বির বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় আসামির বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীচর থানায় মামলা দায়ের করেন।

ডিসি জাফর হোসেন বলেন, মামলার তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। হামলার ঘটনায় জড়িত ময়লাবাহী ভ্যানের চালক জীবনকে শনাক্ত করতে কামরাঙ্গীচারসহ আশপাশের এলাকার ময়লা সংগ্রহকারী ইজারাদারসহ ৩০০ থেকে ৩৫০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে আসামি জীবনের অনুপস্থিতির বিষয়টি বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাছ থেকে আসামি জীবনের পরিচয় ও ঠিকানা পাওয়া যায়।

তবে এ ঘটনায় কাজ করতে গিয়ে পুলিশ দেখে ময়লা পরিবহন ও সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের কোনো তথ্য ভাণ্ডার নেই। ফলে তাকে শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে।

লালবাগ বিভাগের ডিসি জাফর হোসেন আরও বলেন, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের ওপর হামলায় জড়িত পলাতক আসামি জীবনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শেষে পুলিশ জানতে পারে রংপুর গঙ্গাচরা থানা এলাকায় আত্মগোপনে আছে। পরবর্তীতে গঙ্গাচরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় হামলাকারী জীবনকে গ্রেফতার করে ঢাকায় আনা হয়।

এ হামলার ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না জানতে চাইলে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পর আসামি জীবন দুজনের তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু হামলায় তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সে বিষয় তদন্ত করা হবে। তবে হামলার সময়ে তিনি একাই ছিলেন। আর হামলায় ব্যবহৃত স্ট্যাম্পটি তার বাসায় ছিল বলে দাবি তার। তবে সবকিছু সামনে রেখে তদন্ত চলছে। পুলিশের ওপর হামলার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

টিটি/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।