ইসিতে অভিযোগ
নৌকার সমর্থনে মাঠে একাধিক সরকারি কর্মকর্তা
চলছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। অভিযোগ উঠেছে নৌকার সমর্থনে ভোট চাইতে মাঠে নেমে পড়েছেন একাধিক কর্মকর্তা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এসব অভিযোগ করছেন। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম ওরফে বাবুর পক্ষে নৌকার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছেন এক উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এ অভিযোগে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ধীমান চন্দ্র মণ্ডল আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. সায়মা আফরোজকে শোকজ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্যে করে চিঠিতে জানানো হয়, আপনি বর্তমানে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) হিসেবে কর্মরত আছেন। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা হয়েও আপনার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৭৭(১)৩ এবং ৮৬ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আপনার উপযুক্ত কর্মকাণ্ডের জন্য আপনার বিরুদ্ধে উক্ত আইন ভঙ্গের দায়ে বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন বরাবর কেনো সুপারিশ করা হবে না তা ২৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় জানাতে হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ দেওয়া হলো।
এদিকে, অভিযোগ উঠেছে, ঢাকা থেকে ছুটিতে গিয়ে এলাকায় নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন প্রতিরক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম। রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের নৌকার প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারার পক্ষে তিনি ভোট চেয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে তিনি প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও যোগ দিচ্ছেন।
অন্যদিকে, মেহেরপুর-১ (সদর- মুজিবনগর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান ফোন করে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর একটি রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ওই কর্মকর্তা এ ঘটনায় কোথাও লিখিত অভিযোগ দেননি।
অভিযোগের বিষয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ওই সরকারি কর্মকর্তা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। তাকে বিষয়টি বোঝাতে তিনি ফোন করেছিলেন।
মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। আর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নাম অলোক কুমার দাশ।
সরকারি কর্মকর্তার ভোট চাওয়া প্রসঙ্গে আবদুল মান্নান বলেন, কে কোন কাজ করবেন তা কিন্তু নির্ধারিত। আমি একজন রাজনীতিবিদ আমার কাজ রাজনীতি করা। উনি একজন সরকারি কর্মকর্তা উনার কাজ রোগীদের সেবা দেওয়া। অথচ রোগীদের সেবা না দিয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে অলোক কুমার দাশ সারাদিন প্রতিমন্ত্রীর বাসায় বসে থাকেন। অলোক নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। এটা কিন্তু অলোক বাবুর কাজ নয়। এ কারণে অলোককে বোঝানোর জন্য ফোন দিয়েছিলেন। অডিওটি কাটছাট করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ কাজ করেছেন তারা। তবে পুরো অডিও প্রকাশ করা হলে সবাই প্রকৃত বিষয়টি জানতে পারতেন।
এমওএস/এসএনআর/জিকেএস